প্রতি প্রাতে উঠে সতী দ্বার মেলে সর্বাগ্রে,
অতঃপর একে একে জাগে সর্বজনে ।
প্রাতে উঠিয়া সতী নির্জনে আনমনা থাকে,
ধীরে ধীরে সে গৃহের সর্বকর্ম ধাক্কে।
গৃহকোণে তুলসীমঞ্চটা যা ভিট করে বাধা,
প্রত্যহ সূচনাকর্ম তার তাতে জল সাধা।
গৃহের সর্বাগ্রে সর্বজন তাদের প্রাতভোজ সারে,
হরি হরি তড়িঘড়ি সেই সে রন্ধনের তরে।
দিকে দিকে ছুটে সর্ব যার যে সে কর্ম,
মধ্যাহ্নের তরে সে শুরু করে রন্ধন পর্ব।
সর্বান্তে ভোজ সেরে সে গা-খানি হেলে,
বিশ্রামী রন্ধন গৃহে সে সর্বাঙ্গ ঢেলে।
অপরাহ্ণে নিয়ত পূজাপাঠ আর গৃহশোধন চলে,
থাকে না সে পূজাপাঠে ভাগ্যের নির্মম ছলে।
সাঁজবেলা সমস্ত গৃহবন্ধন আর দীপ সে জ্বালে,
অতঃপর ধীরেধীরে সান্ধ্যভোজ সে তোলে।
সর্বকর্ম হলে সারা যায় সে শয়ন কক্ষে,
সহস্র ব্যথা তখন খেলে তার বক্ষে।
বিনিদ্র রজনী কাটে তার সুখের ক্ষণগুলো ভেবে,
পতি প্রয়াণে সেই যে সে সুখ গিয়েছে ভেসে।
এমনি করে কেটে যায় তার গ্রীষ্ম থেকে বসন্ত,
ব্যত্যয় হয়নি তার ষোল বছর আজ পর্যন্ত।
প্রথা উচ্ছেদি রাজা রাম সতীদাহ করিল রদ,
বিধবাকে পুত্রে বিবাহ দিয়ে প্রথাকে দিল পথ।
সতীদাহ রাজা বন্ধ করিল কিন্তু পারিল না বাঁচাতে,
তাই সতী ভুগছে এখনও আজীবনের সাজাতে।