একসময় মনে করতাম জীবন খুবই সুন্দর। আমার বেচে থাকার জন্য ন্যূনতম সবকিছু আছে; আর কী চাই? কিন্তু আমার এই বিশ্বাস ভেঙে গিয়েছে। কেন ভেঙেছে এই কথা আমি আর কাউকে কিছু জানাতে চাই না। এই পৃথিবীতে কত মানুষইতো জীবনের উপর আস্থা হারিয়ে আত্নহত্যা করছে। তাতে কি-ইবা এমন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। কিছুই হয়নি। আমি তাদের দলে নই। আমি দেখতে চাই জীবনে কী কী ছাড়া বাচা সম্ভব। আমার আপাতত কিছুই নেই। এতে আমার কোন দুঃখও নেই। আমি দিব্যি পৃথিবীর রঙমঞ্চে সুখি মানুষের মত অভিনয় করতে পারছি। আমি জানি না আমার এই শক্তিটুকুইবা কত দিন থাকবে। আমার এই শক্তিটুকু যদি আমি হারিয়ে ফেলি তাহলে হয়ত আমারও ঐসব মানুষদের মতই অবস্থা হবে যারা আত্নহত্যা করেও কোন কিছুরই কোন পরিবর্তন করতে পারেনি।
জীবনের কোন স্বাধইতো সর্বসাকুল্যে পুরণ হল না। ভবিষ্যতে যে হবে সে আশাও রাখি না। তবু দুঃখ শুধু একটাই; যারা আমাকে প্রচন্ড ভালবাসে এবং ভালবাসত, তাদের আমি কিছুই দিতে পারিনি। তারপরও এগুলো নিয়ে আমি তেমন একটা ভাবি না। কারন, সবাই সবার মত ভাল আছে হয়ত থাকবেও। ভালবাসার মূল্য কী বা কতটুকু তা আমার জানা নেই। তবে কেউ যদি সামান্যতম নিখুঁত ভালবাসাও আমাকে দেখায়, আমি তার বিনিময়ে জীবন বাজি রাখতে পারি। তাহলে বুঝা গেল আমার কাছে ভালবাসার মূল্য জীবনের চেয়েও বেশি। যদি তাই হবে তবে কেন আমি ভালবাসাহীন থাকব? হয়ত আমি আসল-নকলের তফাৎ বুঝি না তাই আমার এই অবস্থা। কেউ কেউ আমাকে ভালবাসা ভিক্ষা দিতে চায়। কিন্তু আমি ভিক্ষা নেব না। যদি আমি সত্যি কারো কাছে ভালবাসা পাওনা হয়ে থাকি তাহলে তাই নেব; ভিক্ষা নয়। আমি ভালবাসার কাঙ্গাল কিন্তু ভিক্ষুক নই। পৃথিবীতে মানুষকে কিছু মানুষ তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য ব্যবহার করে, তা আমি জানি। আমিও হয়ত করি। কিন্তু নিজের স্বার্থের জন্য অন্যের স্বার্থ খর্ব করা বা নষ্ট করাটাকে আমি জঘন্য অন্যায় বলে মনে করি। আমার সাথে আমার কিছু প্রিয়জনেরা তা-ই করছে অথবা করার চেষ্টা করছে। তার মানে হল আমি তাদের কর্তৃক ব্যবহৃত হচ্ছি। কিন্তু কেন? আমি কখনো আমার সামান্য সুখের জন্য কাউকে ব্যবহার করতে পারি না বা কখনো পারিনিও। তবে কেন আমি ব্যবহৃত হব? এখন আমি স্বার্থপর হব; কঠিন স্বার্থপর। এখন আমি বুঝেছি, পৃথিবীতে বাকিটুকু নিয়ে বেচে থাকতে হলে মানুষকে ভালবাসা নয়, ব্যবহার করা জানতে হবে।
২৬ আগস্ট, ২০০৬খ্রিঃ।