এই পথকে আমি একদিন বলেছিলুম বিজয়াকে আমার সামনে এনে দাঁড় করাতে।
পথ আমার কথা রেখেছে-
কিন্তু বিজয়া!
বরুণ, তোর মেনে নেয়ার ক্ষমতা দেখে আমি অবাক হই
তুচ্ছ একটা কথা নিয়ে বিপুল তোকে যাচ্ছে তাই বলল
তেঁড়েফুঁড়ে মারতে পর্যন্ত আসল
তুই মুখের কথাটিও বললি না।
কি! ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই পার না, -না!
আমি ইশারায় তাকে বুঝালুম, না!
বিজয়া এক গাল হেসে, “ওরে আমার সোনারে, কাছে আয় তোকে একটু আদর করে দিই”।
দুটো হাত ধরে বিজয়া-
জানিস বরুণ তোকে নিয়ে আমার গর্ব হয়
এই ক্যাম্পাসে সবাই তোকে ভালবাসে
ওই এক বিপুল ছাড়া-
আমি বললুম, ”ও তো তোর জন্য-
বিজয়া, এখানে বেশ ভালই পার
এই এক জায়গায় তোমার যত জোর-আবদার, রাগ-বিগ্রহ!
আর কোথাও গিয়ে ত পার না!
আমি তাকে সবিনয়ে বললুম, ”কোথায় যাব বল”?
বিজয়া, ” না বাবা, তোমাকে কোত্থাও যেতে হবে না
আমার এই নরম বক্ষ পরম আদরে সর্বদাই তোমাকে আগলে রাখতে প্রস্তুত।
কতটা বছর একসাথে
কতো খুঁনসুঁটি
কতো মায়া
কতো না দেবার প্রতিশ্রুতি!
বিজয়া আমাকে দিয়েছে, অনেক দিয়েছে
আমি মিথ্যে বলব না-
মাস-ছয়েক হল মাস্টার্স পর্ব শেষ করেছি
বেশ কিছুদিন যাবৎ বিজয়ার মুঠোফোনটা বন্ধ!
এক সন্ধ্যায় বিপুল এসে জানাল-
বিজয়া তার মাসীর ছেলে নরেনকে বিয়ে করেছে।
বিশ্বাস হয়নি-হবার কথাও নয়
বিজয়া...!
বিপুল বৃথা বাক্য ব্যয় না করে কটা ছবি দেখাল
বুকটায় যেন আমার তীর বিঁধল
মেহেদীর রং, লাল শাড়ি যেন আমার বুকের রক্তে লাল হয়ে আছে!
সে বিয়ে করেছে, দুঃখ নেই
দুঃখ এতটুকু, আমায় জানাতে তো পারত!
এক গাল হাসি উপহার দিতে না পারি
এক রাজ্য বেদনা তো দিতাম না!
কি ছিল তার মনে তা জানার বড় সাধ ছিল আমার
তা আর পূরণ হল না!
পূরণ হবে কি না তাও জানি না-
পথের আয়োজনে আজো আমি বিপথ হতে পারিনি!
সামনে থেকে যতদূর সে হেঁটে গেল চেয়েই রইলাম বাকরুদ্ধ হয়ে
আর আমার শত বারণ উপেক্ষা করে-করুন চোখের লোনা জলগুলি
বুকে নদী বইয়ে দিল!
আর বুকটা গুনগুনিয়ে বলতে থাকল-
“হায় প্রেম, হায় আশা
হায়রে নারীর মন...”!

উত্তরা, ঢাকা
০৬/০৭/২০১৭ খ্রিস্টাব্দ।