মহাকাশ ভেদ করে দুঃস্বপ্ন আসে মধ্যরাতে,
জানালার কাঁচ ভেঙে তোমার মৃত অনুভূতি আঁকড়ে ধরে এক নতুন বাস্তবতা....
আমি আজ তোমার কথা বলবো;
তুমি উদাসের বেসামরিক নগ্ন পৃষ্ঠদেশে স্বৈরাচার নিপাত যাক,
হাহাকারের পৃথিবীতে তুমি নিভে যাওয়া শেষ প্রদীপ;
শেষ জ্বলে যাওয়া সার্চলাইট।
তুমি গণতান্ত্রিক রাজার উদরপূর্তি
সমাবেশে নিশ্চুপ-নিশ্চল কাঠের পুতুল,
তুমি ক্ষমতার তীব্র আলোয় বিচ্ছুরিত কিছু ভূল সিদ্ধান্ত।
সূর্যোদয়ের আকাশে তুমি প্রেমিকের সদ্য তাজা লাশ!
তুমি রক্তে রক্তে শিরায় উপশিরায় দ্বেষ ক্লেশ উৎকণ্ঠা
মধ্যমা হতে তর্জনি অব্ধি তুমি শহীদ মিনার,
তুমি শেষ বিকেলের হঠাৎ ফুটন্ত গোলাপ।
তুমি সৈনিকের ফায়ারিং স্কোয়াডের মিসফায়ার,
মায়ের আঁচলে শেষ আশ্রয়স্থল।
তুমি বিভীষিকার দেয়ালে ঠুকে দেয়া প্রথম পেরেক,
খরস্রোতা নদীর ফেনিল জলে অবগাহন।
তুমি মদ্যপের রামের বোতলের শেষ চুমুক
তুমি ধর্ষিতার লেপ্টে যাওয়া কম দামি লিপস্টিকের রঙ,
জোর করে হাসপাতালে প্রেমিকার এ্যবোরশন।
তুমি ঈগলের তীক্ষ্ণ নখের ডগায় শিকারের তাজা রক্ত
প্রেমিকের ভালোবাসি বলে দেওয়া নয়নতারা ফুল।
তুমি ভূলে ভরা একটি প্রথম প্রেমপত্র,
সদ্যজাত অনাকাঙ্ক্ষিত শিশুর বিদীর্ণ চিৎকার!
তুমি অযুত মিথ্যের স্তুপের ওপর দাঁডিয়ে থাকা চিরন্তন সত্য,
আততায়ীর হাতের খুন হয়ে যাওয়া গুপ্তচরের বুকপকেটের চিরকুট, "তোমায় ভালোবাসি"।
তুমি স্বপ্নের মতো পবিত্র,
তুমি ঈশ্বরের মতো সুন্দর,
তুমি পাখির মতো স্বাধীন,
তুমি কবির মতো বৃহৎ,
তুমি মহাকালের মতো অসীম,
তুমি বিপ্লবীর মতো প্রখর,
তুমি প্রেমিকের মতো আর্ত,
তুমি প্রেমিকার মতো কঠোর।
তাই তোমায় ভালোবাসি; এই ভালোবাসার কোনো মানচিত্র নেই, নিজস্ব কোনো পতাকা নেই, নেই লিখিত কিংবা মৌখিক সংবিধান!
তোমায় ভালোবাসি, এই ভালোবাসার কোনো সীমানা নেই, কোনো কাঁটাতার নেই, নেই কোনো বিনিময়!
তাই তোমায় ভালোবাসি, বাঙলাদেশ!