আজব বটে গুজব নয়
     এসব কথা মানতে হয়
               মুরুব্বীরা তাই কয়।

উতলে ওঠে দুধ যদি
               জ্বাল দেওয়ার সময়
কিংবা যদি বোতল থেকে
         খানিকটা তেল পড়ে যায়
সংসারের জন্য দুটোই নাকি
                     মঙ্গল অতিশয়।

ডালা-চালা-কুলা যদি
                   ছোঁয়া লাগে পায়
ভক্তিভরে চুমো খেয়ে
              কপালে ছোঁয়াতে হয়
পান খেয়ে চুন মুছলে
              বেড়া কিংবা দরজায়
সুখ-শান্তি ক্রমান্বয়ে
                     নির্বাসনে যায়।

টাকা পয়সা ধার দিলে
                       রাতের বেলায়
অভাব অনটন লেগে থাকে
                       আসে দুঃসময়
ঝড় বাদলের সাথে যদি
                          শিলাবৃষ্টি হয়
শিল-পাটা উঠোনে ফেললে
                      দ্রুত থেমে যায়।

যাত্রা পথে জোড়-শালিক দেখা
                        মঙ্গলজনক মানি
সন্ধ্যাবেলা ঘর ঝাড়ু দিলে
                 আর চুলে দিলে চিরুনি
সেই সংসারে নাকি দুঃখ আনে
                            সর্বনাশা শনি।

ভাঙা আয়নায় মুখ দেখলে
                       আয়ু কমতে থাকে
স্বামীর আগে খাবার খেলে
                        স্ত্রী পড়বে বিপাকে
ছেঁড়া জুতো পুরোন ঝাড়ু
                       বেঁধে রাখলে গাছে
ফলন বাড়ে আর সেই সাথে
                     কুনজর থেকে বাঁচে।

অন্তঃসত্ত্বা বধু যদি
                  মাছ- তরকারি কোটে
সন্তান তখন ভূমিষ্ঠ হবে
                       নিয়ে কাটা ঠোঁটে
জমজ কলা খেলে নাকি
                       জমজ সন্তান হয়
শনি-মঙ্গলবারে নববধূ
                       বাপের বাড়ি যায়
বারের কারণে অমঙ্গল
                          তার পিছু ধায়।
  
ব্যাঙ ডাকলে বৃষ্টি পড়ে    
                   মোরগ ডাকলে ভোর
কুকুর ডাকলে উর্দ্ধঃশ্বাসে
                    ছিটকে পালায় চোর
শেয়াল কুকুরের কান্না
                  অতিমাত্রায় খরা বন্যা
কাকের কর্কশ ডাকাডাকি
                বিপদ-আপদ দেয় উঁকি
পেঁচার ডাক অশুভ আর
             শকুন ডাকলে মৃত্যুর ঝুঁকি।

পরীক্ষা দিতে যাবার আগে
                 আলু ডিম খাওয়া বারণ
পরীক্ষায় শূন্য পাওয়া
                এটাই নাকি প্রধান কারণ
পরিপাটি সুন্দর দাঁত গজানোর শর্তে
দুধের দাঁত ফেলতে হয় ইঁদুরের গর্তে।

শনি-মঙ্গল দুই দিন  
                 শুভকাজ করা কঠিন
আনলাকি থারটিন
            ভালো কিছুর আশা ক্ষীণ।
কুটুম পাখি ডাকে যখন
  আর হঠাৎ চিরুনিটা পড়লে তখন
আত্মীয়-স্বজন আসবে বাড়ি
              হাতে নিয়ে মিষ্টির হাঁড়ি।

বউ-পাগলা সেই ছেলে
                      ঘাম ঝরে যার নাকে
সত্যি -মিথ্যে নিরুপন করি
                   টিকটিকির 'টিক 'ডাকে।
হঠাৎ যদি চোখ কাঁপে
                     দুঃখ আসে বটে
বসা নাকি আছে বারণ
          জানালা-দরজার চৌকাঠে।
যাত্রা নাকি অশুভ অতি
                   খালি কলস থাকলে পথে
কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা আসে
                      চুলকায় যার ডান হাতে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগে
              মনস্তাত্ত্বিক নানা রোগে
                   এখনো অনেকেই ভোগে।