রাস্তার মোড়ে মোড়ে শপিংমল ব্যস্ততম পথচারীদের হাট,
শব্দ দূষণে অসুস্থ নগরী গুলিস্তান থেকে সদর ঘাট।
পা শিরশির করা পড়মান অট্রালিকায় রুগ্ন পুরাতন ঢাকা
মাঝে মধ্যে স্বস্তি দেয় পুষ্প উদ্যান, উড়াল সেতুর পাখা।
চারশত বছরের মহাকাব্যে শুনি প্রাচীন নগরীর ইতিহাস
ক্যাসিনো,তারকা হোটেল নাগরিক জীবনে নিদারুণ উপহাস।
ট্যানারি আর বুড়িগঙ্গার কালো জলের বিদঘুটে গন্ধ
কেউ কারো নয় সচেতন নাগরিক সমাজ বড়ই অন্ধ।
রাজপথ থেকে ফুটপাত সর্বত্র হাইজ্যাকার টাউট বাটপারদের আনাগোনা
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য আর আদম বেপারীর স্বপ্ন বুনা।
দিন শেষে ভবঘুরে মানুষ ফুটপাত জুড়ে পাতে সংসার
অধুনাদের দেখা মেলে রমনা,হাতির ঝিল,ধানমন্ডি লেক পাড়।
বায়োগ্রাফী হাতে গ্রাম্য মেধাবীরা আসে চাকুরির খোঁজে
জুতা ছিড়ে প্যান্ট ফাটে ময়লা জমে কলারের ভাজে।
এবড়ো থেবড়ো রাস্তায় রং চটা পাবলিক পরিবহণ-সর্বাধুনিক ফ্যাশনের গাড়ী
রেল পথের দুধারে বস্তি,অন্যত্র চোঁখ ধাঁধানো প্রাসাদ বাড়ী।
মিটিমিটি জ্বলে গ্যাসের চুলা,ওয়াসার পানিতে গন্ধ
বাপ দাদার ভিটা বেদখল হয় তবু মুখ বন্ধ।
কখনো এটি পৃথিবীর এক নম্বর বসবাস অনুপযোগী শহর,
আবার বছর জুড়ে ঢোল-সানাই উৎসবে মাতোয়ারা বর।
কেউ বলে এটি মসজিদের শহর, জাদুঘরের নগরী
রঙিন পোষ্টার-ব্যানার, সাইন বোর্ডে সাজোয়া অপ্সরী।
বাড়ীওয়ালাদের হাকডাক,রাতে মশা দিনে মাছি
নিঃশব্দ ক্রন্দন ঢাকার ব্যাচেলর জীবন সত্যিই মিছামিছি।
তথাপিও ইতিহাস ও ঐতিহ্য পিছু ডাকে জাহাঙ্গীরনগর
বেনারশী আর মসলিনের মোহে ছুটে আসতো কত সওদাগর!
আহসান মঞ্জিল, লাল বাগ কিল্লা, ঢাকেশ্বরী মন্দির
আর্মেনীয়ান গীর্জা, তারা মসজিদ,সমাধি পরী বিবির।
বাহান্ন উনসত্তর একাত্তর বাঙালীর চূড়ান্ত অর্জন স্বাধীনতা
রক্তের মহাসমুদ্রে এখানেই প্রথম উড়েছিল লাল সবুজের পতাকা।
প্রতিদিন হাজারো মানুষ ছুটে আসে ঘুরাতে ভাগ্যের চাকা।
এখানে জীবন অন্যরকম; ঢাকার তুলনা শুধুই ঢাকা।