মকবুল চাচার প্রায়ই পেটে ব্যথা, করবে এখন কি?
ডাক্তার খরচের ভয়ে গেল পাশের ফার্মেসি।
তিন দিনের ঔষধ দিয়ে, বললো দেখেন খেয়ে
ঔষধের দাম কম রেখেছি বিক্রয় মূল্যের চেয়ে।

সস্তা কোম্পানির ঔষধ দিয়ে, বেশি পেল মুনাফা
কাজ হলো না ঔষধ খেয়ে ব্যথায় মরছে চাচা।
আবার গেলো ফার্মেসিতে বললো অবস্থা
রিপোর্ট দিল অমুক জায়গায় তাও নাকি সস্তা।

ক্যামিস্টের কথা মতই,  চাচা গেল ডায়গনস্টিক
রিপোর্ট দেখে ঔষধ দিয়ে বলে, এবার হবে ঠিক।
রিপোর্টের কমিশন পেয়ে, ক্যামিষ্ট বেজায় খুশি।
চাচা তবুও পেটের ব্যথায় কাঁদছে দিবা-নিশি।

কি আর করা, না হবে না,  দেখাবো এমবিবিএস।
কর্জ করে যেতে হবে পকেটে টাকা শেষ।
ডাক্তার দেখে আগেই বলে,  করেছেন অনেক দেরি।
এই টেষ্ট গুলো যথা সম্ভব করেন তাড়াতাড়ি।

কিন্তু চাচা কোথায় যাবেন, ডাক্তার দিয়েছে লিখে
অন্য জায়গায় করা যাবেনা, শুধুই ওখান থেকে।
কারণ ডাক্তার কমিশন পাবে, প্রত্যেক রোগী প্রতি
সেখানেই গেলেন মকবুল চাচা, কি আর আছে গতি?

বিল দেখে মকবুল চাচার, মাথায় পড়লো বাজ।
এত টাকা নেইতো কাছে, টেস্ট করাবেনা আজ।
ফিরে গিয়ে স্বজনদের কাছে হাত-পা ধরে চেপে
কিছু টাকার ব্যবস্থা হলো অনেক মেপে মেপে।

টেষ্ট দেখে ডাক্তার ঔষধ দিলো, পুরো প্রেসক্রিপ্‌শন ভরে।
সব কোম্পানির ঔষধই দিবে, গেছে ভিজিট করে।
লাগবেনা যেটা সেটাও দিলো, কারণ আছে কমিটমেন্ট।
মাসে মাসে নানান কোম্পানি, একাউন্টে টাকা করে সেন্ট।

কদিন চাচা ভালোই ছিল, পেটের ব্যথা কম
হঠাৎ এখন কেমন যে লাগে, আটকে আসে দম।
ঔষধে ঔষধে মিথস্ক্রিয়ায়, নানান সমস্যায় ভোগে
মন মেজাজও ভালো নাই, যখন তখন যায় রেগে।

ডাক্তারের কাছে আবার গেল, বললো সকল কথা
টেস্ট দিয়ে বলে করে আসুন,  ঠাণ্ডা রাখুন মাথা।
নতুন রিপোর্ট দেখে বলে, আগেরটা ছিল ভুল
এখন চাচা করবে টা কি, কে দিবে মাশুল?

বাড়ি থেকে হবেনা আর,  অবস্থা খারাপের দিকে
দ্রুত যেন ভর্তি হয় চাচা, ডাক্তারের নিজ ক্লিনিকে।
চাচা এখন হতাশ অনেক, খরচ পাবে কোথায়?
বাপ দাদার ভিটে ছাড়া, আর কিছুই নাই।

সন্তানরা বেচতে রাজি নয়, মাথা গোঁজার সম্বল।
থাকবে না রোগ যাবে সেরে, বাবাকে দেয় মন বল।
দিনের পর দিন ভুগছে চাচা নিজ ঘরের কোণে।
বাঁচবো না আর বিদায় নেব, ভাবছে মনে মনে।

চাচা নেই আজ সবাই আছে, ফার্মেসি ডাক্তার গুলো
ক্লিনিক আছে, ডায়াগনস্টিক আছে, রিপোর্ট হয় ভুলও।
আগের মত চলছে সবই, গরীবের টাকা খেয়ে
চিকিৎসা ব্যবস্থা চলছে এভাবে একই স্রোতে বয়ে।

চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই, সিন্ডিকেট চাই ধ্বংস
সবখানে চাই সু-ব্যবস্থা, বাদ না থাকুক কোন অংশ।
দেশের মানুষ দেশেই চিকিৎসা নিবে, হবেনা বিদেশ মুখি
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা পেয়ে সবাই হবে সুখী।


[ দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার গোপন কথা গুলো সীমিত আকারে তুলে ধরেছি এই কবিতায়। অনেক কথায় বলা হয়নি তবুও অনেক বড় হয়ে গেছে কবিতাটি। চিকিৎসা ব্যবস্থার এই সিস্টেম থেকে আমাদের দেশকে দ্রুত মুক্তি করা প্রয়োজন ]