হেমন্ত এসেছে ধীর পায়ে
শরতের উচ্ছ্বসিত বিকেলের পরে
সে এসে দাঁড়িয়েছে নিশ্চুপে।
এইসব মরা কার্তিকে কৃষাণীর চোখে মুখে
ভেসে আসে রোদনের গান
বছরের শেষ দিনে এখনো পাকেনি ফসল
এখনো সবুজ রঙে অবুঝ ধান দোলে
ভোরের প্রথম প্রহরে নেমেছে শিশির কণা
প্রচ্ছন্ন কুয়াশা ঘুমায় মাঠের দূর্বাঘাসে!
কার্তিকের প্যাঁচা উড়ে গেলে
অগ্রহায়ণ দূয়ারে দূয়ারে নতুন গান তোলে
কৃষাণী বউ ঢেঁকিতে পা রেখে
গুণ গুণ করে আগামীর স্বপ্ন বুনে
কর্তিকের সবুজ ধান অগ্রহায়ণে গেছে পেঁকে
সোনা ঝরা ধানে কৃষক হাসে অবশেষে
ঘরে ঘরে নতুন চালের সুখে
কৃষকের ছেলে-মেয়ে মাতে নবান্ন উৎসবে
হাজার বছর ধরে হেমন্তের বিকেলে
বাংলা মায়ের মুখে সুখের হাসি ঝরে!
এই যে হেমন্ত এসেছে নিরবে বাংলার পথে ঘাটে
ফসল তোলার পরে দেখি চেয়ে কেবলি শূন্যতা মাঠে
এমনি করে এ জীবন একদিন যাবে ঝরে
যে জীবন একদা ভরে ছিল ফুলে আর ফসলে!
হেমন্তের এই নির্জনতা শেষে
আবার কৃষক গাইবে নতুন গান ফসলের মাঠে
এক মানব জনম শেষ হলে
নতুন শিশুদের কলকাকলীতে এ পথ মুখরিত হবে!
এক হেমন্তের অবসানে
কৃষক তাকাবে নতুন ফসল বুনে আরেক হেমন্ত পানে!