কাহার কালো আঁচল ছড়ায়েছে পুরোটা মাঠ জুড়ে
পশ্চিমের আকাশ লাল হলো; হাসান হোসেনের রক্তে!
বাঁশ বাগানের মাথার উপরে- এক কালো জ্বীন বসেছে
নিরব নিথর পাতার ফাঁক গলে- বইছে গরম বাতাসে।
নদীর ঘোলা জলের স্রোতের গভীরে আঁধার নামছে ধীরে
পাখিরা ঝাঁপটানো ডানায় ভর করে ফিরছে আপন নীড়ে।
ধূলায় ধূসরিত নগ্ন পায়ে গরুর পাল লয়ে ফিরছে রাখালে
পুকুর পাড়ে ডাকছে বালিকা- আমার হাঁস আয় আয় রে..

মসজিদে আযান হাঁকছে মুয়াজ্জিন- হাইয়া আলাল ফালাহ
আযানের সুর বেয়ে যেন পৃথিবীর বুকে নেমে এলো সন্ধ্যা।

কেরোসিনে ভেঁজানো সলতে চুয়ে জ্বলছে হ্যারিকেন
মিটি মিটি জ্বলে ঘরে ঘরে- জোনাক পোকার মত ক্ষিণ।
একটু টুকরো হলুদ আগুন নাচে- আলোকিত করে ঘর
খোকা খুকু পড়ছে জোরে অ তে- তেড়ে আসছে অজগর!
দাদির তসবি দানার উপর পড়ছে হ্যারিকেনের মৃদু আলো
এসেছে সব পোকামাকড়ের দল বেসে আলোরে ভালো!
রানার ছুটছে হ্যারিকেন হাতে চিঠির ঝোলা নিয়ে দূরে
চৌকিদার হাঁকছে গাঁয়ের পথে-  খবরদার জোরে জোরে।
দূরের গাঁ হতে বেহেরার দল ছুটছে পালকিতে বধূ লয়ে
হ্যারিকেনের আলোতে চলছে পথ বিয়ের গানের সুরে।
মায়ের হাতের আদর মাখা হ্যারিকেনের আলো ছুঁয়ে
বাবার শাসনে বেড়েছে শিশু সারা বাংলার ঘরে ঘরে।