কে বলে কবিতা সাধারণ লোকে ভালোবাসে না। এক্ষুনি একটা ঘটনা ঘটলো। আমার এক বন্ধু কাঠের ব্যাবসায়ী, প্রভূত পয়সা তার। মাল খেয়েছে বেশ বোঝা গেল, আমার চেম্বারে এসেছিল। এ কথা সে কথার পর সে আমায় বলে, ভোম্বল, তোকে আমার জন্য একটা কবিতা লিখে দিতে হবে। আমি বলি তা বল কী লিখতে হবে। সে আমায় একটি কাহিনী শোনায়। আমি বলি চুপ করে বসে থাক লিখে দিচ্ছি। বলে লেখা শুরু করি। আর সে বকবক করতে থাকে। আমি বারবার ওকে ধমক লাগাই, কবিতা লেখা এত সহজ নাকী, তার জন্য মাথা লাগাতে লাগে। বললেই চুপ হয় , ফের বকবক শুরু করে। রাগ করে আমি লেখা থামিয়ে দি। বলি, আজ এটুকুই লিখলাম, কাল আসিস দিয়ে দেব। সে বলে কী লিখলি শোনা তো। একবার নয় তিন তিন বার আমার মুখে শুনলো তারপর আমায় জড়িয়ে ধরে।বলে,পয়সা দিচ্ছি, তোকে একটু মাল খাওয়াব। তুই তো কবিগুরু। গুরুদেব। আরও কত কী। ধমক দিয়ে বাড়ি পাঠাই ওকে, বলি, লিখে রাখবো, কাল এসে পুরোটা নিয়ে যাস। এইমাত্র গেল। কী লিখেছিলাম দিচ্ছিঃ

একদা চাহুনি হানিলো শানিত প্রশ্ন বাণেতে পাতি
অবলা আমারে পথমানে রই বহিতে
জীবনভাতি।
ছোট ছাউনিতে মোর জীর্ণ কুঠিতে চলে বেচাকেনা
তেলেভাজা আর পেয়াজ পাপড়ি
আর আছে ধার দেনা।
সে চাহিল পানেতে মোর সহানুভূতির আঁখে
পুছিল কেন সে রয়েছি;
আমি পথ মাঝে।
কহিনু তাহারে স্বামীহারা হই নাহি মোর কেহ
দুইখান প্রাণ ছোট শিশু মোর
রয়েছে আপন গৃহ।
নীরব তো রবিলো না সে রাহী অপরূপ
দিল সে দানেতে আমায়
জ্যোছনায় ফুটফুট।

কে বলে লোকে কবিতা ভালোবাসে না?

(সংযোজনাঃ সে আসে নাই তবু লেখাটি দুলাইন এগিয়ে রাখলাম)

ভরা কোটালেতে হৃদ বাদ্য বাজিলো, গগন আসিলো নীচু
রাহী সে চাহিলো না সে; প্রতিদানে
আগুপিছু।
ক্ষণিকো উজারে ধরা ভাবি আপনাহে
এমতো উদার বাহুতে সে বল-দানিলো
কে হে!
সহসা ধাবিনু ঈশ্বর পানে হৃত গৌরব আজি
লুপ্ত না হয় ধরায় বাজিছে!
কামেতে মজেছে
কাজী।