শব্দ চয়ন। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এব্যাপারে কিছু লেখবার জন্য। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু সম্ভব লিখছি।
এটা একটা বিশাল বড় ক্ষেত্র। প্রথমেই যেটা প্রয়োজন তা হল একাগ্রতা। যে বিষয়ে লিখব তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাওয়া। আমি শব্দ চয়ন করি না। আমি যে ব্যাপারে বা যাকে নিয়ে লিখছি তার সাথে আমাকে একাত্ম হতে হবে। বিষয় বা সেই ব্যাক্তি করবে শব্দ চয়ন। মনে করুন আমি যদি গাঁ-এর কোনও মেয়ের দুঃখের কাহিনী বর্ণনা করি আমার লেখায়, তখন আমি আমার হৃদয় মনকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যাব যেন আমিই হয়ে যাব সেই মেয়েটি। সেই মেয়েটির কখাগুলিই হবে আমার কবিতার শব্দ চয়ন। এ ব্যাপারটা কারুর সহজাত কাউকে অর্জন করতে হয়। অর্জন কিভাবে করবো।
তার জন্য লাগবে অভ্যাস, অধ্যাবসায় আর তপস্যা। কিভাবে? রাস্তায় একটি কুড়ানি মেয়েকে দেখুন, দেখুন আর ভাবতে থাকুন। একটি বাচ্চা মেয়ে তার এসময় আনন্দ্দ ফুর্তিতে মেতে থাকার কথা। স্কুলে যাবার কথা।অথচ একটা গরীব ঘরে জন্মে আজ সে কুড়ানি। তার পরিবারের কথা ভাবতে থাকুন। মনে হবে হয়তো বা তার বাবা বদ্ধ মাতাল। ঘর পরিবার দেখে না। ঘরে খাবার নেই। তাই নিতান্ত অসহায় হয়েই তাকে বাধ্য হয়ে একাজ করতে হচ্ছে। দেখুন লিখতে গিয়েই চোখে জল চলে এল। একেই বলে একাত্মতা। এখন ধরুন সেই মেয়েটির কাহিনী আমি লিখতে যাচ্ছি।
মাগো আমার পা চলেনা বোঁঝার ভারে ওগো,
তাও কী মা ভয় নেই রে
পৌছে ঠিকই যাব।
এখন তো মা ভর দুপুর রোদ্দুরেতে ঠা ঠা,
ধৈর্য ধর একটু মা'গো, আনছি
আমি টাকা।
দেখুন এগুলি আমার কথা নয়। মেয়েটি বলছে আর আমার চোখ দিয়ে জল গড়াচ্ছে। শব্দ চয়ন কী আমি করলাম না সেই মেয়েটি। (চলবে)।
আন্তরিক শুভকামনা সহ আপনাদের প্রিয় সঞ্জয় কর্মকার।