তার লেখাটি এইরূপঃ-মদন দাদু(ছন্দ নিয়ে খেলা)
তাড়াতাড়ি খুমিয়ে যাবি শশী কিংবা কান্ত,
মদন দাদু ঘুমিয়ে গেলেই, ঘুমের ঘোরে জ্যন্ত!
রাতের বেলা হতাক পতাক শুনতে যদি পাস,
ভুল করে ভাই কম্বল থেকে বাইরেতে না চাস।
ভূতের ভয় তুচ্ছ হয় মোদের মদন দাদুর কাছে,
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাবি নইলে বিপদ আছে।
সরু সরু শরীর তার, পেঁচার মতো গোঁফের জোড়া,
তবু যেন ভয়ানক রাতের বেলা মদন খুড়া!
ঘড়ির কাঁটা যখন ছোঁবে বারোর ঘর আর পাঁচ,
মদন দাদু দাঁড়িয়ে দিয়ে, ঝপাং ঝপাং নাচ!
লোকে বলবে ঘুমিয়ে আছে, তুমি বলবে বাপরে!
ভয়ানক সেই রাতের বেলা ভূতের মতো লাফরে।
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাবি শশী কিংবা কান্ত,
মদন দাদু ঘুমিয়ে গেলেই, ঘুমের ঘোরে জ্যান্ত!
জীবনের প্রথম প্রাতে মায়ের আঁচল তলে খোকা খুকির দেশে গেনু ভেসে মন। গভীর গহীন সাগরে ডুবে গেল হৃদয়। মনে ভেসে এল সেই সুর, হাট্টি মা'টিম টিম, তার মাঠে পাড়ে ডিম তারা হাট্টি মাটিম টিম", তাঁতির ঘরে ঘোগ-এর বাসা, কোলা ব্যঙ-এর ছা-খায় দায় গান গায়, তাইরে নাইরে না"।
"খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এল দেশে, বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দিব কি'সে!" সেই কথা থাবর আর গুনগুন করে ঘুমের দেশে পৌছে দেবার অনলস প্রয়াস। দুফোঁটা জল গড়িয়ে এল হৃদয়।
খোকা খুকুরা অত্যন্ত চপলমতি, খেলাতেই মগ্ন থাকে সারা দিন। খুমুতেই চায় না। অন্যদিকে মায়েরা সারাদিন সংসারের বিবিধ কাজকর্ম তৎসহ শিশুদের পর্যবেক্ষণে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে শেষ বেলায় একটু বিশ্রাম নিতে চাইলে খোকা খুকুরা মেতে থাকে তাদের জগতে। তাদের ফেলে রেখে তো আর চোখের পাতা বন্ধ করা যায় না। যদি খেলতে খেলতে খাট থেকে পরে যায় বা উচ্ছিষ্ট কিছু খেয়ে ফেলে।
তাই চলতেই থাকে নিরলস প্রয়াস তাদের ঘুমের দেশে পাঠাবার তরে। তারা কি এ অবাধ্য প্রচেষ্টা মেনে নিতে চায়! তাই মন ভোলাতে গুন গুন করে মা গাইতে চলেন নানাবিধ কথাকলি বা কাব্য উপকথা। কখনো বা গান আবার কখনো বা ভূত প্রেতের উপাখ্যান।
তাই তো দেশে দেশে যুগে যুগে কবিদল এরকম শিশু মন ভোলানো ছড়া লিখে থাকেন।
আসরে প্রিয় কবিও তাই এঁকেছেন মদন খূঁড়োর গল্পগাঁথা। মদন দাদু ঘুমিয়ে গেলেই নাকি জ্যান্ত হয়ে ওঠেন আর ভীষণ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন তাই খোকা খুকিদের কম্বলের বাহির যাওয়া মানা। সরু সরু শরীর তার আর পেঁচার মত গোঁফ। রাতে তো এদিক ওদিক বিভিন্ন শব্দ কানে আসে, সে শব্দ না'কি মদন খুড়োর নাচের। সে নাকি ভূতের চেয়েও ভয়ঙ্কর। রাত বারোটা বাজলেই সে নাকি ধিতাং ধিতাং করে নৃত্য করতে থাকে। সে নাচ নাকি ভীষণ ভীষণ ভয়ঙ্কর। তাই বাবা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরো নইলে মদন খুড়ো এসে যাবে।
অপূর্ব সুন্দর ছন্দময় কথা কাহিনীতে দুরন্ত কবিতা উপহার দেবার জন্যে প্রিয় কবিকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। ইতি আপনাদের প্রিয় সঞ্জয় কর্মকার।