Sanjay Karmakar
Top contributor·enrsodpSto1c3fa969mi1au616cu9m1342h51f0486hl9t878h138f341370·
(যারা ইতিপূর্বে পূর্বের পঞ্চদশ পর্ব পাঠ করেছেন তারা ইচ্ছে হলে কেবলমাত্র ষোড়শ তম পর্ব দেখতে পারেন।)

XVI

লিপ্সাকাতর তার ওই জঠর ঘর হতে ঘর জাল বোনে
তপ্ত গরম লাভায় সে তার বিদ্বেষের-ওই দাঁড় টানে।।
বিষয় আসয় লোভিত পরাণ নিত্য রণ ও বিসম্বাদে  
দীপ্তি হরা জাহান সে ভূম ভ্রান্তি বিলাস তার ফাঁদে।।
সে ফাঁদ গলে বিঁধিত পরাণ পঙ্কিলতায় পায় গতি
আলোক যেথায় মুদেয় আঁখি করালতায় সদয় প্রীতি।।
বিষের বীণেই প্রভাত সেথা পার করে দিন দিনান্তে
নিশার কালোয় ঘনায় তমা সে দেশ তমস দিগন্তে ।।
অহমিকার ঘের-বাঁধনে বিশ্ব নিখিল গগন ক্ষিতি
নিত্য বড়াই করছি সদা রণ আর লহু তার-ওই গীতি।।

I

জীবন তো এক ভ্রান্তি যেমন দুঃখ সুখের বান
দুখ এলে কাল কালোয় ঘনায় জুঝতে চলি রণ।।
সুখের দিলে পঙ্খ মিলে আকাশ পানে উড়ি
আর মোহ তার জড়ায় জালে দিতেই গড়াগড়ি।।
কপোত সুখের আশায় জীবন হিংসা দ্বেষের গড়ে
সকল ভুলি প্রেম পরিণয়-বিশ্ব তার ওই তরে............।

II

ভ্রান্তি খানিক থমকে দ্বারে ব্যথায় ভাঙে বুক
চর জাগে তল তরঙ্গিলী আছড়ে সেথায় দুখ।।
শঙ্কা জাগে হৃদ সাগরে তুফান ঘনায় বেগে
ব্যাকুল হৃদয় পার হতে হ্রদ তার করুণা মাগে।।
ঘর পরিজন সহায় ভুবন এক আকাশের চাওয়া
তুঙ্গতার ওই শীর্ষে তার ওই বইতে চলি খেয়া।।
ঝঞ্ঝা তুফান বেষ্টনীতে ওপার দুয়ার খুঁজতে চলি
এ কূল হতে ও কূলে ভেসে দুহাত মিলায় হলাহল-ই!!

III

বিশ্বমাতা রূপের বাহার আহার বিহার স্বপ্ন্ববিলাস
সে দান ভুলি সকল তাহার করতে চলি বিবেক নাশ।।
এক পৃথিবী কান্না তাহার আর এক গড়ি ধনের গড়
নাই রে কিছুই মর্ম তাহার মরম বোধে আপন পর।।
ঘর পরিবার আহার বিহার বদ্ধ কূপেই জীবন রণ
আর পৃথিবী দূরেই ফেলি অহং বোধেই করছি পণ।।
লোভ আর লাভেই ভাবতে চলি স্বার্থ মোহ অহংকার
মান আর হুঁশের বাধ্য বাধক সে দিশা রোজ করছি পার।।
বিবেক রহিত মানুষ মোরা আজ কলি তার সায়াহ্নেতে
ভাইচারা নাই প্রেম ও প্রণয় দূর চলি বেশ অরির গীতে।।

IV

আর্তনাদে এক পৃথিবী রক্ত লহুর বইছে ঢল
ধর্ম তার ওই আস্তিনেতে দাবড়ে বেড়ায় অহির দল।।
বিষাক্ততা বিষ গরলে সুখ হরা আজ দেশ আর দশে
চৌদিশাতে রণ আর লহু দেশ হতে দেশ ভরছে লাশে।
ভ্রম আর রণেই উঠছি মেতে দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
অন্তরীপে প্রেম আর প্রীতি রক্ষ রাজ এই অন্তরে।।
জীবন তো ভ্রম মরণ শাশ্বত ভ্রমের দেশেই রণের পণ
সব ভুলে রাজ রক্ষ অহম-তমায় ঘনায় তপোবন।।
জীবন তো এক ভ্রান্তি যেমন দুঃখ সুখের বান
অহম বোধেই সব ভুলে যাই জুঝতে চলি রণ।।

V

আর মেদিনী আর্ত সেবায় সকল ভুলি অহংকারে
খর সে বায়ু ঝঞ্ঝা প্রবল বইছে সকল দ্বার আর দ্বারে।।
হিংসা দ্বেষে জর্জরিত জহর তার ঐ নিনাদ তার
অহম বোধেই সকল ভুলি করতে চলি বিষোদগার।
কোন সে প্রাচীর কোন সীমানা নাই কো দিশা মনের দ্বারে
মত্ত হৃদয় মদ আর নারী চলছি রে পথ রতির ঘোরে।।
এ পথ তমার তমস কালো সে জ্ঞান রহিত নইকো বটে
তবুও সে পথ দাঁড় বেয়ে যাই পদস্খলন চিত্রপটে।।
ক্ষণিক সুখের মোহের ঘোরে উৎযাপনে সে দেশ তমা
আব্রু লুটাই মা আর বোনের পথেই হারাই তিলোত্তমা।।

VI

ঊষর সে পথ চলছি মোহে কাম আর ভোগেই লিপ্ত রই
পুড়লে কপাল মন্দ কারো-উল্লাসে মন তৃপ্ত হই।।
আর জমানা থাক না পিছে আর্ত কিবা পীড়িত যারা
ধন গড়িমা বিষয় আসয় সেই তো মোদের বোঝাপড়া।।
পালকি চলে দুলকি চালে চার বেহারা পায়ের তল
দম্ভ মোদের আকাশ উঁচু আর দমনে পেশীর বল।।  
গগন ক্ষিতি সূর্য তারা সৌম্যতাতেই সুউন্নত
ভাবনা মনে পালিত মোরা হইনা কভূ সেবায় নত।।
ভ্রান্তি যেথায় হৃদ মদিরা ভ্রান্ত পথেই দাঁড় টানি
দাঙ্গা ফ্যাসদ খুন আর লুটে-রণ তামাসায় হানাহানি।
জ্ঞানাঙ্গনে দূষিত মোরা মানব সে জ্ঞান নাই হুঁশে
বদান্যতায় নাই কো মতি-এ মন আমার বন পোষে।।

VII

বন্য ক্রুর হিংস্র পরাণ জীবকূলে জীব-শ্রেষ্ট নরে
প্রেম ভুলে রাজ রক্ষ রাবণ-কলির রাজে অতঃপরে।।
বিজলি বাদল প্রেমের সুধা, সজীবতায় ভরায় ধরা
আর মানবে ধ্বংস প্রবণ ঢল বহে তার অবাক করা।
বল্গা তার ওই নাই কো লাগাম শস্ত্র সাজি ঘাতক বাণে
রণভেরি তার দিচ্ছি পুকার ছুটছি আজি প্রলয় পানে।।
ঘুর্ণি যেমন ঘুরায় বায়ু তখত সে তার ছিন্নতার-ই
কপট হৃদে শপথ ক্রুর মারতে মানুষ দেই বাড়ি।।
জান্তবতায় শীর্ষে মোরা-শ্রেষ্ট যে হই জীব কূলে!!
ঐশীতা তার প্রেমের দেশের-হিংসা দ্বেষেই যাই ভুলে।।

VIII

ভুলের দেশেই ভ্রমণ মোদের ঘর হতে দেশ বিশ্ব সারা
পায় কী ভুবন শান্তি খানিক!নাই যে সে তার-কূল সাহারা।।
কূল গেছে তার বানেই ভেসে আর সাহারা মোদের ছল
জিঘাংসার ওই বৃত্তি নেশায় আস্ফালনেই কাটছে পল।
দিক হতে দিক আগ্রাসনের লুন্ঠনের-ওই খেলায় মাতি
শ্রেষ্ঠ মোরা জীবের সেরা এই ধরণীর পাপীর জাতি।।
পাপের সে দেশ পঙ্কিলতায়-নিত্য ভরাই এই ভুবন
হিংসা তার ওই জহর ফেলায় লুটতে চলি তপোবন।।
পাপস্খলন করতে দিশা ধর্ম তার ওই ধ্বজা ধরি
মূর্তি কোথাও কোথাও নারাজ ভ্রান্ত পথেই গড় করি।।

IX

বাদশা রাজা হয় যে ফকির কাল এলে দ্বার ঘরের দোরে
সব ভুলে মন বিকার জ্বালায় রই যে অহম অহংকারে।।
জ্ঞান আর বোধে বাস্তবতায় সে জ্ঞান মোরা রহিত নই
তবুও হৃদয় হার না মানা রণ যোজনায় লিপ্ত রই।।
সে রণ প্রকার বিবিধ তাহা ছল চাতুরীর ইত্যবসর
য'দিন জীবন রনংদেহী নাই রে কেহই আপন পর।।
পরাক্রমেই বাঁচতে জীবন ছল চাতুরীর নেই ব্রত
পল পল দিন ঘোর সে নিবিড় করছি ক্ষত অবিরত।।
আর্ত ধরা আর্তনাদেই আর মেদিনী যাক ভেসে
পোষণ কিবা পুষ্টি হারাক ফিরবো ঘরে জয়ীর বেশে।।

X

আত্মশ্লাঘায় এ মন আমার তুষ্টি বোধে হই প্রীত
ভ্রান্তি তমায় মানতে নারাজ ভ্রান্তি বোধে হই না নত।।
পাওয়ার নেশায় পাপের গড়ে বসত আমার রাত্র দিবা
হয় না এ মন তুষ্টি প্রাণে-যা আছে প্রাণ কিরণ শোভা।।
হীরক  দ্যুতির ঝলক পেতে এ মন আমার ঝড় তোলে
ছল চাতুরীর সহায় প্রীতি দরাজ দিলে নেই তুলে।।
গরল আমার মজ্জাগত নাই পরিধি তল সীমানা
মানবতার পৃষ্ঠ সে কোন, এ মন আমার নাইকো জানা।।
ঈর্ষা যেথায় আকাশ উঁচু ভ্রান্তি সেথায় ঝড় তোলে
কদর্যতায় তার সে গতি কান্তি বিহীন; পল আর পলে।।
সখ্যতারওই ভান ভনিতায় রাজ করি তল বিশ্ব ভুবন
পাপের রাজে জ্ঞান সে বিকায়; রাত্র দিবাই-আমার এ মন।।

XI

উব্ধে গগন উদার আকাশ নিম্নে সাগর ভূতল তার
তার মাঝে বয় জীবন বিবিধ সৃষ্টি শোভার সমাহার।।
বিবিধতায় বিশালতায় রস আর রঙের এই ধরণী
তার ওপারে অলক অমোঘ দীপ্তি ছড়ায় বৈতরণী।।
ওপার খেয়া ডাক এলে তার ভ্রান্তি সকল যায় ঘুচে
সে জ্ঞান রহিত নই কো মাঝি; হৃদ হতে দূর দেই মুছে।।
আর দুনিয়া ফেলাই তমস জিঘাংসার-ওই অমোঘ পণে
ব্যাপ্তি সে তার ভূতল সাগর-রক্ত লহুর রণাঙ্গনে।।
এ পণ আমার রক্তে মেশা শিরায় শিরায় তুলছে রব
ঘৃণ্য এ পথ বিবেক রহিত নাই কিছু তার অনুভব।।

XII

সঞ্চালনে সংবহনে লহুর সে দোষ হৃদয় দেশে  
নৃশংসতায় হারায় এ মন দাপিয়ে বেড়াই রক্ষ বেশে।।
উগ্র সে রূপ বন্ধ্যা অতি পাপের দেশেই পদস্খলন
অবাধ্যতায় অমান্যতায়-বিষ অরি হয় প্রস্ফুটন।।
ঘর হতে পর ছড়িয়ে প্রদেশ জহর সে তার সর্বনাশা
কুমন্ত্রণায় কোণায় কোণায় হিংসা দ্বেষের চালাই পাশা।।
উন্মাদনায় সে ঘোর তমায় দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
দেশ ও জাতি আকাশ ক্ষিতি বিভেদতার বিষেই ভরে।।
তপ্ত সীসায় ধায় সে গতি বারুদ বোমা বিস্ফোরণ
মানবতার মান হারিয়ে পাপাচারেই অহিত রণ।।

XIII

বিড়ম্বনার দেশ ও জাতি হিংস্রতার ঐ থাবায় ক্রর
বিভীষিকায় গরলতায় কাঁপছে ভয়ে থরো থরো।।
আর পৃথিবী জয়ের নেশায় বোম বাড়ি আর বিস্ফোরণে
নিরত সদাই ধ্বংস সে পণ; সে পণ আমার লিপ্ত রণে।।
এ মন আমার হৃষ্ট ঋজু ব্যাথিততা্র নাই কো বোধ
উল্লাসে রাজ হৃদ দরিয়া জাত পাতে রই সদাই বুঁদ।।
পর ভূমে রাজ রক্ত ঝরায় আর দমনে তুষ্ট হই
আত্মদহন নাই কো হৃদে হৃদ দরিয়ায় হিংসা বই।।
এই কী মানব মানবতার এ পণ আমার ভ্রান্তি সম
ভ্রান্তিবিলাস ব্যসন আমার কলির রাজে এ পথ তমঃ।।

XIV

বহিরাঙ্গে সৌম্য শ্যামল হৃদ পুজে রণ কান্তি হরা
গোপন আতাত সন্ধি করাল প্রহেলিকায় বিকার ধরা।
আচম্বিতে হানতে আঘাত দস্যু যেমন পাকায় বেণী
ভ্রান্ত এ মন জহর জৌলুস হলাহলের প্রদর্শনী।।
অহিত সাধন নাই কো বাঁধন এ মন আমার বল্গা বিহীন
শক্তি বলয় শত্রুতাতে নয়কো আমার এ মন দীন।।
কলির রাজে এ মন পূজে শক্তি সোপান পথ ধরি
শ্রস্ত্র দেমাক তার গড়িমা আর ক্ষমতায় রণ করি।
লোলুপতায় আর লালসায় লপ্ত শিখা বহ্নি তার-ই
তূষের অনল বিছায় হৃদে-বিষ ও গরল; তার পূজারী।।

XV

জ্যোৎস্না যেমন স্নিগ্ধ শোভা কলঙ্কেতে রই মিশে
অঙ্গে তাহার এই বসুধার বিষ গরলে যাই ভেসে।।
বিভাবরীর নিশীথ সে পল গুপ্ত আঘাত হানতে রই
তার মহিমা ছলায় মেতে প্রাণ নিতে রণ ভ্রষ্ট হই।।
ইবলিশ এর ওই বংশ ধারায় অনল আমার সৃজন সাথী
জাহান্নমের বহ্নি দহে; আমরা এই ধরনীর অধিপতি।।
প্রাণ নিতে রণ ভ্রমের দেশে-ভ্রান্তি সবে নই নত
তমার দেশের তাজ সে আমি শৌর্য শাসক সুউন্নত।
এই পৃথিবীর কোণায় কোণায় দীপ্ত চরণ বিহার মোর
এক হতে এক ঘরের দোরে ভ্রান্তি তার ওই ঘনঘোর।।