অনেকেই জানতে চান বা আগ্রহ প্রকাশ করেন আমি কেমন করে এত অল্প সময়ে কবিতা লিখতে পারি। তা খোলসা করতেই আমার এ লেখা।
প্রথম কথাঃ কোনও সস্তা চলতি শব্দ কবিতায় ব্যাবহার করি না, কবিতায় ব্যাবহার করবার মত কোমল প্রতিশব্দ খুজে নি। দ্বিতীয়তঃ কী বিষয়ে কিভাবে কবিতাটির রূপরেখা আঁকব বা কবিতাটিতে আমি কী বলতে চাচ্ছি মানসিক স্তরে একটা রূপরেখা অঙ্কিত করে নি। তৃতীয়তঃ কবিতাটিকে কোমলতার পরশে আঁকব না জীবনমুখী বা রূপক অথবা তপ্ত সুরে লিখব তা স্থির স্থির করে নি। চতুর্থতঃ একটা লাইন লেখবার পর সেটি বার বার সেই রাগেতে পাঠ করি তাহলেই সামঞ্জস্যপূর্ণ দ্বিতীয় লাইন হৃদয় থেকে বার হয়ে আসে। কিছুটা লেখবার পর থেকেই বার বার পাঠ করতে করতে এগিয়ে যাই। একটা উদাহরণ দেবার চেষ্টা করি। যদি আমি লিখিঃ
আজিকে শ্রাবণ ঘন তুমি নেই পাশে কান্নায় ঝরে প্রাণ।
এবার দ্বিতীয় লাইন লেখবার আগে আমি রূপরেখা তৈরি করে নিলাম এ কবিতাটি বিরহের সুরে লেখব। এবার প্রাণের সাথে উপযুক্ত শব্দ কী কী হতে পারে। প্রাণ, গান, অবদান, ম্লান, অম্লান ,মান। এবার কবিতাটির দ্বিতীয় লাইন কল্পনা করি।
জীবন আমার পাশার খেলাতে
রক্ত লহুতে ম্লান।
এবার এটাকে বার বার পাঠ করবো। তারপর এগিয়ে চলবো।
আজিকে শ্রাবণ ঘন-তুমি নেই পাশে-
কান্নায় ঝরে প্রাণ
জীবন আমার পাশার খেলাতে
রক্ত লহুতে ম্লান।
তুমি ছিলে সই প্রাণের ধারায় বিহঙ্গ কলরব,
তুমি ছিলে সই হৃদ প্রাণেতে
দেবতারই অবয়ব। দেবতারই অবয়ব।
তুমি ছিলে সই-তুমি ছিলে সই-
দেবতারই অবয়ব।
আজিকে প্রাণেতে বেদনার গান-অশ্রু ঝরিছে বহু,
হায়েনার দল হাঁকারির বোলে
কেড়ে নিতে মান-ইজ্জত
লহু।
তপ্ত ধরাতে রক্ত লহুতে কামুক সে আহ্বান,
কেঁদে ওঠে হৃদ অঞ্জনে তমা
কম্পণে হৃদমন।
আজিকে শ্রাবণ ঘন-তুমি নেই পাশে-
কান্নায় ঝরে প্রাণ
জীবন আমার পাশার খেলাতে
রক্ত লহুতে ম্লান।
কবিতাটি এখনই এখানেই লেখা হল। এবার এটা বার বার পাঠ করবো। দু-একটা শব্দ পরিবর্তন করতে হলে করে প্রকাশ দেব।
আন্তরিক শুভকামনা রইল প্রিয় কবি। আপনাদের প্রিয় সঞ্জয় কর্মকার।