খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় একটি বেদনা ভরা লেখা। সব ওই ঠিক ছিল তবে শেষটায় এসে চোখে জল এলো।  সন্তানের সামান্য ইচ্ছে পয়সার অভাবে পূরণ করতে না পারা যে কতটা বেদনার তা শুধুমাত্র বাবারাই অনুভব করতে পারে।

কবিতাটিতে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনধারা অঙ্কিত রয়েছে। সরকারি চাকুরি করে মোটা মাইনে পেলেও যে সকল পরিবারে অভাবই লেগে থাকে মাসভর। একক চাকরির অর্জিত অর্থে ভাই বোন বাবা মা স্ত্রী পুত্র সকলকেই খেয়ালে রাখতে হয়। খাওয়া পড়া, নিত্য প্রয়োজনীয় সাম্রগাদি ছাড়াও অসুখ বিসুখ ঔষধ পথ্য ইত্যাদি তো আছেই।

মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেদের প্রায় সকলকেই বাড়ি বানাবার জন্য বা নগর ভিত্তিক জীবন যাপন করবার জন্য সুদে ব্যাঙ্কের লোন নিয়ে একটি ফ্লাট কিনতে হয়। প্রায় ১০-১৫ বছর ধরে ই এম আই এর বোঝা কাঁধে ঝুলেই থাকে। তা পরিমাণে খুব কম হয় না।

বেতন পেতেই সবার আগে সেই ই এম আই এর টাকা কাটা যায় ব্যাঙ্ক হতেই। বাকি যা বাঁচলো মুদিখানা , মাছের দোকান , মাংসের দোকান বা বিভিন্ন জায়গার ধার বাকি কাটাতেই প্রায় শেষের দিকে চলে যায়। ঔষধ পাতি , বাচ্চার টিউশন ফিস, বাসের টাকা, স্কুলের ফিস মিটাতে মিটাতে দিন কয়েকের মধ্যেই টাকা শেষ হয়ে যায়। বাকি মাস আবার ধার বাকিতেই চলতে হয়।

কবির কথায় এমন হতে হতে সেই সব মধ্যবিত্ত মানুষগুলি যারা আগে ধার বাকি করতে চাইতেন না সেই মানুষগুলিই চোখে ঢুলি দিয়ে ধার বাকি করতে অভ্যস্থ হয়ে যান। কবির ভাষায়ঃ-  
"এখন আর বাকি করতে লজ্জা হয় না"
"এমনকি মাঝে মাঝে মেটাতে ব্যর্থ হই সন্তানের ছোট কিছু বায়না। কষ্ট হয় , তবে আর লজ্জা হয়না"।
ভীষণ বেদনা ভরা কথা।

এমনকি সেই পরিবারের ছোট সন্তানটিও বাবার এমন অসহয়তা অনুভব করতে পারে আর তাই বাবার কাছে আবদার নয় বরঞ্চ এভাবে বলে :-
"তোমার টাকা হলে আমরা একদিন নান রুটি আর গ্রীল মুরগী খাবো, আচ্ছা বাবা"
এখানে এসে চোখের জল আর বাঁধ মানে না।

সুন্দর একটি লেখা উপহার দেবার জন্য কবির জন্য রইল আমার উষ্ণ অভিনন্দন।