হে শিশির,
মাঘ মাসের সুপ্রকাশ অবতার তুমি
ঘন সাদা মেঘে
সূর্য তখন সদা পিছু হটে বারেবারে
তাহার রশ্মির ছটা কভু পৌছায় কোনোবারে।
শৈত্যপ্রবাহ যখন তার হেয়ালিপনায় দৌড়য়
কনকনে অনুভূতির অমোঘ জাগ্রত বারেক
শীতঘুমের আধার কাটিয়ে
তুমি তোমার চিরপরিচিত রূপ নিয়ে প্রকাশিত হও আরেক।
জলীয় বাষ্পর ন্যায় তুমি হও ভারী।
সৃষ্টি করো সাদা চাদরের ফোয়ারা।
নিশীথের যামিনীতে তুমি ফোঁটায় ফোঁটায়
কখনো গাছের পাতার স্পর্শে
আবার কখনো ঘন ঘাসের ছাউনিতে
জমা হও সেই কালরাত্রিতে।
পাও নতুন সমাগমের দ্বারা।
ভোরের আকাশপানে তুমি হয়ে যাও
দৃষ্টিনন্দন বিস্ময়।
পরিযায়ী পাখির মনোহরা সেনানীতে
তুমি পাও নবপালক।
এ যেন আকাশের নতুন ডাক
কুয়াশাঘেরা শিশিরে পা
মৃদু মৃদু ঠান্ডা হাওয়ার চামর
ঘুচায় মনের কোঠরে তা।
আকাশভরা, সূর্য-তারা তোমার সাদৃশ্যে
পৌছুয় নতুন ভারে।
আম,জামকাঠাল,জামরুল গাছের সারি সারি স্পন্দন
তোমারে নিয়ে যায় নতুনত্বে।
বারো মাসে তেরো পার্বণ
তেরটা নতুন দিক
কাশফুলের আগমনী সংসারে
বেজে যায় তোমার ডঙ্কা
পাও নিজ সত্বের ভিত।
অরণ্যচারী বনানীতে তুমি সপ্তশিখরে
বিশাল বনস্পতিদের ঘেরা ডালা
ঘিরে যায় মাঝে
তপনের কিরণ যখন খানিকটা ছোঁয়ায়
সেই চারাপোনারা অমৃতের মত
শিশিরের ঝর্না পায়
তাহার বড়দের পাতার ভারে।
সেই স্মৃতিটুকু ক্ষণিকের সাথী
দুধেলা শিশুদের মুখে হাসি
শিশিরে ঘেরা সেই স্বপ্নর সকাল
যেন অজানা পথিকের নাবিক।
আর তো কয়েক দিনের মুহুর্ত
শৈত্যপ্রবাহের হবে অবসান
সূর্য তার চরম লগ্নে আসর,
তুমিও হয়ে যাবে চলে একাকী
আকাশ থেকে নামা দূত হয়ে
শুধু অপেক্ষায় পরের মরশুমে
যখন ধরা দেবে আবার যাত্রি।