একদিন এক মুচি জায়গা পেল
প্রাসাদের এক ছোট্ট মোড়ে অন্যান্য দোকানের সাথে
ছিল তার একটি ছোট্ট টঙ
তাহাতে নিয়ে সমস্ত সরঞ্জাম।
প্রাসাদটির ছিল এক আস্ত গম্বুজ
তার ছায়া পড়ত টঙটির উপরে
ঢেকে যেত পুরো মোড়।
প্রাসাদটি দেখেছে সারা আকাশ দিক থেকে দিগন্ত
মুচির চাওয়া যেন ঢেকে পড়েছে,
প্রাসাদের আড়ালে।
প্রাসাদ করছে উপহাস,
মুচিকে হেসে
উনেক উপর থেকে দেখেছে সে সারা দুনিয়াটা।
তার দেওয়াল, থাম ও গম্বুজ সবই যেন সাক্ষী।
মুচির ক্ষুদ্র কায়া তার চোখ মাড়ায় না।
কত অতিথিই না আশ্রয় করেছে প্রাসাদের শিখরে
সেটা হোক তীক্ষ্ম চিল, কিংবা কুড়িয়ে উড়া দাড়কাক
আবর্জনার স্তূপ জমে হয়েছে ভারী
তারপর, একদিন হঠাৎ আসল বৃষ্টি
ঝড়ে হুড়মুড়িয়ে সব লোটপাট।
প্রাসাদটা যেন ভেঙে পড়বে
প্রাসাদের শিখরটা লড়ছে
মুচি ভয়ে কাতর।
কী বা করবে সে
প্রাসাদের মোড়েই যে তার একমাত্র ছাউনি।
ছোট টঙটাই তার শেষ সম্বল।
প্রাসাদ শেন দৃষ্টিতে মুচির দিকে তাকিয়ে
সহ্য করেছে ঝড়ের সমস্ত আঘাত।
উড়ে গিয়েছে টঙের ছাউনি
সজোরে আছড়ে পড়েছে গম্বুজে
তাকে আষ্টেপিষ্টে বেধে রেখেছে
মুছেছে তাহার কান্না।
অপরদিকে মুচি পেয়েছে প্রাসাদের কোণে ঠাই
অন্যান্য ভিক্ষুকদের সাথে,
সাথে বৃষ্টির জল আর একটুখানি বাসি রুটি।
হঠাৎ থামল বৃষ্টি।
ঠান্ডা দমকা হাওয়া বইছে।
সেই হাওয়ায় আসল নেমে
সেই ছাউনিটি
কিন্তু সে একা নয়,
তার সাথে গম্বুজের নয়া চুনকাম করা রঙ
সেই ক্ষণিকের মুহুর্ত
যা চিনিয়ে দিয়েছে প্রাসাদকে
বাড়িয়েছিল বন্ধুত্ব'র হাত
একতার সুর ছাউনি গেথেছিল
আর প্রাসাদ তাতে ছড়িয়েছে রঙ।
তারপর ঝড়ের শেষে,
মুচি দিল প্রসাদকে বিদায়।
সে আবার ফিরে তার পুরনো জায়গায়
বিরাট প্রাসাদের কোলে
পেল বন্ধুত্ব'র মূল্য
যা তার আজীবন রয়ে।