আমার জীবনটা যেন হয়ে গিয়েছে একটা মুখস্থবিদ্যা
দিনভর কাজ করি শেষে -
   তার হিসেব মানিয়ে চলতে হয়।
গুনতে হয় রেশনের চালের দাম
   গুছতে হয় হেঁসেলে পড়ে থাকার সবজির দর।
রেহাই নেই কিছুতে
কোনো কিছু যেন এখন অবান্তর লাগে না।
বন্ধ হয়ে গিয়েছে মোর জীবনের কোলাহল
শুধু হিসেব আর হিসেব
ছেড়া পাতার ন্যায় অধরা হয়ে পড়েছে মোর অধ্যায়।
এটাতে থাবা বসিয়েছে-
বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংয়ে ঝুলতে থাকা বিকৃত লেখাগুলো
কেড়েছে থাবা লাইটপোস্টের নীচে বিক্রি হওয়া ইংরেজি পেপারগুলো।
মোর যে কী এই আকর্ষণ।
দেখেছি যাত্রাপালার মঞ্চে সাজানো সেই হাড়ভাঙা স্ক্রিপ্ট
করেছে চেষ্টা দুএকবার, তবুও হয়নি ধার
  দেখে দেখে আমার যেন অর্ধেকটা মুখস্থ হয়ে গেছে।
আমি যেন হয়ে গিয়েছি বোকাবাক্সের যন্ত্র।
সবই যেন কেমন চেনা হয়ে গেছে;
মুখস্থে গড়া এই জগতে।
আমি কিন্তু হার মানিনি
আবারও চালিয়েছি চেষ্টা;
যখন দেখি ডাক্তারখানার বাইরে কাতর একটি মুমূর্ষু রোগীকে।
দেখেছি ঔষুধের একটি লম্বা লিস্ট।
রুগ্ন, অশিক্ষিত সেই লোকটি।
পড়তে পারছেনা তার নাম
      করতে পারছেনা মুখস্থ।
আমি কিন্তু ঠিক পেরেছি
করেছি মুখস্থ সবটা।
চিনিয়ে দিলাম তার হিসেব।
পৌছিয়ে দিলাম তার পথ।
আর নয় মুখস্থ
মুখস্থবিদ্যা এবার তোমায় দিলাম বিদায়।
জীবনের সমস্ত নকল মুখস্থ এখন পড়ে থাক কোনায়;
এটা যেন আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুখস্থ।