সেই দিনটা ভারী অদ্ভুত ছিল, যেদিন পৃথিবীর হল জন্ম
ছিল একটা অগ্নিগোলক,
                        চারিদিকে শুধু গ্যাসের চাদর।
তারপর কোটি কোটি বছরের বিবর্তনের ফলে জন্ম হল জলের,
তারপর ধীরে ধীরে অরণ্য,পোকামাকড়,চারপদী জীব,দুপদী জীব,স্তন্যপায়ীর,
সবচেয়ে বুদ্ধিমান জীব মানুষের ছিটেফোটা ও ছিল না তখন
এরপর কালের সমীপে হঠাৎ একদিন বাদর থেকে জন্ম হল মানুষের।
সে পৃথিবীর ইতিহাসে যুগান্তকারী সৃষ্টি হলেও এর খারাপ দিক ছিল ভয়ানক,
প্রথম দিকে ছিল না তাদের 'মান ও হুশ', ছিল সম্পূর্ণ জান্তব
প্রথমে খাবার সন্ধানে কাচা মাংস খেলেও,
পরবর্তী সময়ে আবিষ্কার করে ফেলল চকমকি,
সেটা দিয়ে খাবার ঝলসিয়ে খেতে আরম্ভ করল।
গুহায় চারনকরী, বাকল পরিধানকারী মানুষ প্রথমে ধাতুর,
তারপর ক্রমপর্যায়ে যন্ত্র ও অবশেষে ফসল ফলাতে শেখল,
দুপদী মানুষ ধীরে ধীরে সভ্য হতে লাগল।
পৃথিবীর সমস্ত ভূখণ্ডে মনুষ্যজাতি তাদের আস্তানা গেড়ে ফেলল,
এখনও পর্যন্ত বন্য পশুপাখির সংখ্যা তাদের থেকে বেশী ছিল,
মানুষদের সংখ্যা ছিল অতি নগণ্য,
তারপর অভিযোজনের হাত ধরে তারা হয়ে গেল পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী সংখ্যাধারী।
বন্য পশুদের সংখ্যা হতে লাগল কম,
শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে বসবাসকারী গাছপালাদের সংখ্যাও কমতে লাগল।
একটা দল যারা অরণ্যপ্রেমী ছিল যারা জঙ্গলকে কেন্দ্র করে নিজেরা বসবাস করতে শুরু করল- যাদেরকে তারা নাম দিল গ্রাম,
আর আরেক বড় সংখ্যাধারী সভ্য দল নিজেদের বেশী আরাম স্বাচ্ছন্দ্যর জন্য বিপুল সংখ্যক বন ধ্বংস করে বসবাস করতে লাগল- যাদেরকে নাম দিল তারা নগর,
কিন্তু সবকিছু এখন থেকে শুরু,
একই পূর্বপুরুষ থেকে জন্ম হওয়া সভ্য মনুষ্যজাতি তাদের সৃষ্টি করা ধর্ম,জল,স্থল, বাসস্থানের জন্য এই নীলগ্রহ পৃথিবীটাকে জর্জরিত করল।
এখন প্রশ্ন শুধু এটাই বিবর্তনের ইতিহাসে যেসব জান্তব প্রাণ আগে আসল তার আশীর্বাদ-
নাকি অসভ্য থেকে সভ্য হওয়া মনুষ্যজাতি আশীর্বাদ,
এর উত্তর সবাই কিন্তু জানে
যারা আগে এসেছে তারা অধিক সময় পৃথিবীটাকে শাসন করেছে,
আর যারা পূর্বপুরুষদেরই অংশ, তারা কম সময়ে পৃথিবীর চরম দুর্গতি ঘনিয়ে এনেছে,
বিশ্ব উষ্ণতা, বৃক্ষছেদন, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ তারই প্রমান।
তাই মনুষ্যজাতি ক্ষীণ সময়ের জন্য পৃথিবীকে আলোকিত করলেও-
এর খারাপ দিক আগামী ভবিষ্যতে পৃথিবীর দুর্যোগ ঘনিয়ে আনবে।
তাই বলাই বাহুল্য মনুষ্যজাতি সভ্যতার ইতিহাসে ক্ষণিকের সময়ে আশীর্বাদ হলেও এর অভিশাপের দিকটি চরম।