কলমের নিখুত তুলিতে তুমি সুশোভিত,
ছন্দের নৈপুণ্যে তুমি সদা পরিচিত।
নবযুবাদের লেখার কারণ তুমি কলমের সুর,
কলমের তুলির টানে তুমি হয়ে ওঠ সুমধুর।
পেন্সিলের শিশের স্পন্দনে তুমি হও নবরূপ,
পাতার পর পাতা লেখার পরও তোমার জৌলুষ কমে না,
বাহ, কী অদ্ভুত!
ছোট্ট শিশুদের ছোটবেলার হাসির খোরাক,
কাগজগুলি টানটান।
বিশ্বভূবন ধন্যহৃদয় তোমাতে পায় যেন নবপ্রাণ।
কলম হোক কিংবা পেন্সিল, তুমি নতুন রূপে রঙিন,
বৃষ্টিভেজা খাতার কাগজগুলি করে দেয় এক নতুন মুহূর্তকে সঙ্গীন।
হে কাগজ তুমি শুধু জড় নও,
তুমি একটি নিস্তব্ধ প্রাণ।
হাজার হাজার বছরের লেখনীতে তুমি কখনো পেয়েছ মান, কখনো অসম্মান।
হাজার বছর আগে হঠাৎ কোথাও হতে সৃষ্ট হয়েছ তুমি,
বিজয়ের ডঙ্কা মাথায় নিয়ে তোমাতে জায়গা করে নিয়েছে গৌরবময় স্মৃতি।
সভ্যতার আলো-অন্ধকার উভয় দিক দেখেছো তুমি,
একা ছাউনির মতো জায়গা করে দিয়েছো ইতিহাসের জমি।
তুমি কখনো ঠাই নিয়েছো বিদ্যালয়ের কোলে,
আবার কোথাও ধ্বংসস্তূপ হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছো মাটিতে,
সভ্য আর অসভ্য দুই জাতিকে নিয়ে তৈরী হয়েছে তোমার স্থান,
সময়ের সজীবতাকে মূল্য দিয়ে তোমাতে পায় যেন সবাই পরিত্রাণ।
চিত্রকারদের নিখুত তুলির স্পর্শে তুমি পাও এক নব চিত্রিত রূপ,
দলিল,দস্তাবেজ কিংবা আইন তোমা ছাড়া সব আবর্জনার স্তূপ।
ছাত্র-ছাত্রীদের হাতের লেখার জাদুতে তুমি পাও প্রাপ্য সম্মান,
দেশে বিদেশে রয়েছে যে তোমার ভিন্ন ভিন্ন ডাকনাম।
শিক্ষক-পরীক্ষক গড়ার স্থান তুমি, কমেনি তোমার ক্ষুদা,
যুগের পর যুগ পালটেছে, তবু কমেনি তোমার চাহিদা।
রাজরাজাদের স্বাক্ষ তুমি,ইতিহাসের পাতায় নেই তোমার তুল্য।
দোকানের পর দোকানে, আস্তাকুড়ে পরে থাকো,
নেই কী তোমার কোনো মূল্য ?
তোমাকে ব্যবহার করে মানুষ গড়েছে পাহাড় প্রমাণ নজির,
জগতবাসী যেন ধন্য হৃদয়, তোমাকে পেয়ে সুদৃঢ়।
বৈজ্ঞানিকদের পরিক্ষনের স্থান তুমি, নানা জটিল রূপে আবর্ত,
সাহিত্যিকদের রসের উৎস তুমি, জগতবাসী চিরধন্য।
জড়, ভঙ্গুর পদার্থ হতে সৃষ্টি তুমি,কিন্তু নও অবাঞ্চিত,
তোমার হতে সৃষ্ট জগৎগুরুরা,যেন নয় বিকৃত।
ছেলে মেয়েদের বেড়ে ওঠার মাঝে তুমি শিক্ষার গন্তব্যস্থল,
তুমি শুধু জড় নও, তুমি মানুষ গড়ার সম্পদ।
তুমি যেখানে শিখিয়েছ ইতিহাস নতুন বীরের গল্প,
তুমি যেখানে দেখিয়েছ বিজ্ঞান, এনাটোমির অবস্থান।
অস্থিবিহীন রূপ নিয়ে তুমি তুমি পরে থাকো খামের চিঠি হয়ে,
সাংসারিক জীবনে নিত্যদিনের প্রয়োজনে তুমি রয়েছো হৃদয়ের গহীনে।