যে জেলখানায় কয়েদিরা বসে রয়েছে
তার মধ্যে আমিও ছিলাম একজন
হতাশাগ্রস্ত মুখ
জীর্ণ চেহারা।
কারণ আজকে মোদের ফাঁসি
ঘটনাটা আরও বিস্তর
সেই পাঁচ বছর আগে
যখন আমরা এসেছিলাম
কেউ জানতনা পরস্পরকে
শুধুই একে অপরকে তাকিয়ে
জেলপুলিশ আমাদেরকে নিয়ে গেল
সেই বিশাল জমকালো জেলখানায়
চারিদিকে শুধু পাহাড়
এরই মাঝে ধরা দিয়েছে উত্তুঙ্গ শিখরের মত
সেই জেলখানাটি
শুনেছি এটা থেকে কোনো কয়েদি-
আজ পর্যন্ত পালায়নি।
বিভীষিকার অন্ধকারে ঘেরা এক অভিজ্ঞতা।
তিনজন মোদের রাখা হয়েছিল একই ঘরে।
সেই বিবর্ণ রূপ
নেই কোনো বিদ্যুতের ব্যবস্থা।
অমাবস্যার জমকালো মেঘের মতো
ঘনিয়ে আসত রাত।
মোদের হিসেবের খাতাটা বেশ বড়
তাহারই মাঝে জল্পনা ছিল
বোমা নিয়ে বধ করেছিলাম যে ব্রিটিশদের
আজ তাদিরি অন্ন গ্রাস করতে হচ্ছে।
তারপর পাঁচটি বছর উধাও।
আজকে সেই দিন,
মোদের আজকে ফাঁসি।
অন্যদিনের মত সেইদিনও-
ছিল জমকালো জেলখানা।
আমাদের সেই আগের রূপ
শুধু চেহারাটা অমলিন
সবাই যে যার মতো তৈরী।
বাকি কয়েদিদের দিলাম বিদায়।
মোরা একে একে গেলাম ফাঁসির মঞ্চে।
আমরা আর কিছুই বললাম না
শুধুই একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটু হাসলাম।
আর গভীর বেগ ভরা নিশ্বাস।
তারপর টানা হল সেটা।
পড়ে গেলাম নীচে
শুধু নিথর দেহের মতো মোরা পড়ে রইলাম।
মোরা গেলাম মিলিয়ে।
আর দেখা হবেনা মোদের
হ্যা! আমরাই সেই তিন সুখী অভাগা
ভগত সিং, রাজগুরু আর সুকদেব
হাসতে হাসতে দিলাম বিদায়
মোদের ধরণীর রং মেখে।
শুধু এখন পড়ে থাকবে জেলখানাটি-
বাকি কয়েদিদের সাথে
সেই জমকালো রাতের মতন।