তরাইয়ের অনতিদূরে কপিলাবস্তুতে
জন্ম সেদিন নিভৃত শাবকের
আগাম বাণী হে ব্রাহ্মনেদের
জটিলতার ঘোরপাকে
মানলনা হে রাজঋষি
এক বামন রহিল সবার শেষে
হাত তুলিল অবশেষে।
দিল যে সত্যবাণী
ভবিষ্যতে হবে জগতগুরু
ধন্য হবে হে কপিলাবস্তু
ধন্য হবে হে তরাই অঞ্চল।
বেরোল রাজ ঘোড়ায় নগর ভ্রমণে
দেখিল সবকিছু অতীব লগনে
দেখিল চার ভগ্নজটিল অবস্থা।
মনে প্রচন্ড দাগ কাটিল তার
সংসারের মোহমায়া আর সহে না তার।
গভীর সেই রাতে সবাইকে ছেড়ে
চলে গেল একাকী।
ধারণ করলেন সন্ন্যাস ধর্ম।
বোধি বৃক্ষে একাগ্র মনে
বসে বসে চিন্তন ক্ষণে
গভীর ধ্যানে মগ্ন হয়ে
বোধগম্য লাভ হই
জাগ হে চন্দ্রমা
জাগ হে বোধিবৃক্ষ
তোমারি সেই অবাধ চরণে
দুহাত জড়িয়ে ধরি
তোমার স্পর্শে ভুবন হবে ধন্য
হয়ে তোমার ছায়াসাথি
তুমি সেই জগতস্বর্গ
তুমি সেই চিন্তামণি
গৌতম বুদ্ধ রই।
বোধি ধর্ম বোধি কর্ম বোধি হে জগতবাসী
ধরণীর বুকে ধারণ করে সুফল সাধবার প্রয়াসী।
পর্বতের গাত্রে পাথর খোদাই
জাগবে জগত দেখবে সবাই
তোমারি সেই খোদিত অমরবাণী
রয়ে যাবে চিরকালি।
যখন চলবে পথিক নিবাসী
তারই সাথে পাশাপাশি
তুমি সেই অবিস্মরণীয়
তুমি সেই জাগ্রত দেহাবতার
শান্তির প্রেরক
গৌতম বুদ্ধ রই।
ভিক্ষুক হয়ে রাজ্যে গেলে
পুণ্য পাটলিপুত্রের জলে স্থলে
ছোট্ট অশোক খেলছে সাথী
তার কাছে গিয়ে একদা কই
আর কী বা পাব লই
দিলেন দুখান মাটির গুড়া
এতে তিনি খুশী চওড়া
করল আশীর্বাদ সেই নাবালক অশোককে
আগামী প্রজন্মের মহারাজা শীঘ্রই।
ভ্রাতৃহত্যা নীরব করে
শূন্য সিংহাসনে ধারণ করে
কলিঙ্গে ঘেরা সেই মহাপ্রাঙ্গন
রক্তের নদে ধৌত করে।
খুলে দিয়েছে চিত্তের দোয়ার
সন্ন্যাস ধর্মকে উজে নিয়ে
তোমারি বাণী গভীর মনে
নিয়ে তোমার ধম্মকে বুকে ধরে
প্রাণ কুড়িয়ে যে লই
তুমি হে মহান কর্তা
তুমি হে স্বত্বা
গৌতম বুদ্ধ রই।
বানিয়েছ সংঘ
সাধ্বী হয়ে
দিয়েছ অজস্র শিষ্য
অপার রয়ে
পঞ্চশিষ্য তাহার পত্র
তোমারি ধর্মকে সাঙ করে
হয়েছে মহাসমিতি।
জাগ হে হীনযান
জাগ হে মহাযান
তোমরা দুজন একই সূত্রে গাথা
ধারণ করে আছ মহান বুদ্ধে
তার সমীপে হই
তুমি সেই মহামানব
তুমি সেই মহাবতার
গৌতম বুদ্ধ রই।
একদা একলা নিজের কুটিরে
হেলান দিয়ে ভাবছে কালে
শান্ত সেই অমোঘ মুহুর্ত
তোমারি যাবার যে পালা
মহাভিনিষ্ক্রমণ লাভ করলে
চলে গেলে অতীত হয়ে
রহিল তোমার চির কর্ম
সদা মোদের পাশে হয়ে
তোমার ছায়াসঙ্গী হয়ে
বিশ্ববাসীর সাথে লও
তুমি সেই অমরবিধাতা
তুমি সেই জগতধন্য
গৌতম বুদ্ধ রও।