দেখঃরে ও বিজনবাবু
চলেছে কেমন রাস্তায়
নতুন পোশাক সাহেবিআনায়
হচ্ছে মেতে সজ্জায়
বাজার শেষে বাড়ি ফেরত
গাড়িতে কোন মোড়ে
দেখা গেল দুটি শীর্ণ গাল, রুক্ষ চুল
ভিক্ষার পাত্র থেমে
দেখবে যেন এই সুখের দেশে
এই যেন বিপরীত অবস্থা
বাঙাল কাদছে ঘটির সমীপে
নিদারুণ কষ্টে তা।
ও ঘটিবাবু ওগো ঘটিবাবু
চললে নিজের মতন করেকি
শাখের করাত দিলে তবে
নতুন রূপে ছিচকি
বাঙাল বাড়ির মোরে তুমি
কিনলে ফলের টুকলি।
গিয়ে তবে গিন্নিকে বলে
সাথে নিয়ে কোথায়
নৈশভোজ করবে বাঙাল বন্ধুর বাড়ি
শিহরিত হয়ে অনিচ্ছায়।
খাবার পাতে সব তিক্ত
আছে শুধু ঝাল
গিন্নি যেন অতিশয় নাজেহাল
আসবেনা আর কোনকাল।
ওরে হে বাঙাল বেটি
মস্ত লম্বা চুল
বাঁধবে যে চুলের গোছা
মাথায় গোলাপি রাঙ্গা ফুল।
বাজার করে বাড়ি ফেরত
বরের সাথে আড্ডায়
যাবে ঘটিদের বাড়ি বেনারসি পরে
নতুন উৎসবের ঘটায়।
বাড়ি পৌছে অন্যদের সাথে
চালাল নতুন সংলাপ
এটা নয় ওটা নয়
সংসারের আহারে আলাপ।
উৎসবের শেষে সিদুর খেলা
সবাই যেন তৈরী
তার আগে পানের কৌটো
বাঙ্গাল দিদি খাবে চুন আর মৌরি।
উঠে সে বিদ্যালয়ে
সেই বৃষ্টিভেজা দুপুর
সবাই যখন বাড়ি ফেরত
শুধু একজন বাঙাল বৃদ্ধা
বৃষ্টিভেজা গ্রাহকের অপেক্ষায়।
যাচ্ছিল সেই ঘটি শিক্ষক
হাতে মস্ত বড় ছাতা
বৃদ্ধাকে দেখে মায়া লাগলো
দিয়ে দিল নিজের দামী ছাতা।
বৃষ্টি শেষে রৌদ্রের ঝলকানি
আকাশ যেন পরিষ্কার।
বৃদ্ধা যেন খুব আপ্লুত
ঘটি ছেলের উপকার না ভোলাবর।
ঘটি সাহেব যাবার পথে
বৃদ্ধার আবদারে
দিয়ে দিল তার বাকি ফল
উপকারের রবে।
সাহেব যেন অতিশয় খুশি
তার এমত সৌজন্যে।
যাবার শেষে বাঙাল বৃদ্ধা
দিল আশাভরা হাত।
ঘটি বাঙালের সম্পর্কে গড়ল অনন্য নজির
করবে নতুন দিকের পার।