বর্ষার সেই অঝোর ধারায়
      বারির বেগ বইছে
আমিও কেদারায় বসে
  খবরের কাগজের পাতা উল্টে
সেই ছোট্ট জানালাটির পাশে
   শিউলিমাখা গন্ধে
কত স্মৃতিই না মনে পড়ে যায়।
ভোরের সেই দমকা হাওয়া
    সৌরকিরণের ছটা
জানলার ফোকর দিয়ে ভোরবেলায় হয়
রোজ আমার ঘুম ভাঙার সাথী।
দুপুর রোদে ক্লান্ত ফেরত
         খানিকটা বিশ্রামে শান্তি
জানালার শিকল বয়ে আসা
     সেই হিমেল বাতাস
দেয় কিছুটা স্বস্তি।
সময় পেরে গৌধুলি লগনে
   গরুর দল ফেরত রাখাল
বিহঙ্গের পাল আলোর খোজে
   জানালার সেই পাশ দিয়ে
উড়ে এল কয়েকটা ঘরের বাতির উপরে।
সাঝবেলার সেই পুজোর ক্ষণে
সারাঘর আলোকিত করে
      জালালাম মোমবাতি
ঘরের সেই ছোট্ট কোনায়, বারান্দা সেই পাড়ে
আমার সেই আদুরে জানালাটি যেন সমুজ্জ্বলে আভা দিল
মোর ঘরে ছড়াল দীপ্তি
করল মোর মনকে প্লাবিত।
আঁধারের রাত নামে
             শীতল হয় পাটি
স্বপ্নর সেই জানালা খোলে
দেখা মেলে নীহারিকাকুঞ্জের ঘাটি।
নিশীথের কালো যামিনীতে
    কাটতে চায় না যে প্রহর
দুর্ভেদ্য সেই জানালা জানান দিয়ে যায়
    মোর চিন্তামণির সেই শহর।
সময়ের সাথে বয়সের ধাপে
    কবে যেন চলে গেছে যৌবনের প্রহর।
নেই শিউলির আবেগ, নেই বিহঙ্গের ডাক
সবকিছু হয়ে যেন গেছে কৃত্রিম আলোকে আলোকিত।
এখন বৃদ্ধ জর্জরা হয়ে   জানালার সেই আলোকে
নিজের বিদায়ের প্রহর গুনছি।
জর্জরা হয়েছে জানলাটিও,  
দেখেছে মোর যৌবন বার্ধক্যের দিক    সয়েছে খোলাবন্ধের শব্দ
এখন শুধু অপেক্ষার টানে ঘরের কোনায় সেই জানালাটি
মোর বিদায়ের কলহে    শোকের স্রোত গড়িয়ে যাবে সর্বত্রটি।