আজকে যে পুত্র শাবক বস্তিতে খেলা করছে;
তার নাম হল রাখাল।
একদম রাখাল বালকের মতোই সে দূরন্ত,
তার অস্পষ্ট সন্দিগ্ধ চোখে সর্বদা একটা স্বপ্ন ফুটন্ত।
কিন্তু তার স্বপ্নর মাঝে এসেছে বাধা।
সে বলতে পারেনা,
কারণ সে বোবা।
সেও হতে চায় এই কর্মঠ দুনিয়ার অংশীদার।
এর উপর দারিদ্রতা তার স্বপ্নর মাঝে চির হয়ে দারিয়েছে।
মস্তক নত, হতাশাগ্রস্ত
তবু তার মুখে একটা বিদ্রোহের আগুনে ভরা তেজ রয়েছে।
কারণ সে দেখেছে বস্তির ছায়াভরা দুনিয়ার সাথে-
পাশের কাচঢাকা পৃথিবীর বিস্তর তফাত্।
বস্তির দারিদ্রতা সে দেখেছে।
পাশের পৃথিবী সম্পর্কেও সে জানে।
পাশের পৃথিবীর লোকেরা তাদের অবজ্ঞা করে।
তিরস্কার করে, লাঞ্চিত করে।
ওরা ভূলে গেছে যে বস্তির লোকেরাও যে মানুষ।
তাদেরও হাসি-আহ্লাদ-বেদনা- দুখ ও স্বপ্ন আছে।
তারাও এই বসুন্ধরার অংশীদার।
আর অপরদিকে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংয়ে ঝুলে থাকা লোকেদের-
আর যাই হোক মানুষ বলা যায়না।
কারণ ওরা উচ্চবিত্ত।
ভাব দেখানো তাদের স্বভাব।
টাকায় কেনা তাদের স্বপ্ন।
কাচঢাকা গাড়িতে চলে চলে তারা অলস হয়ে গেছে।
তারা একেবারে জড়তে পরিণত হয়েছে।
তাদের ছেলেদের সাথে বস্তির ছেলে রাখালের বেজায় পার্থক্য,
কারণ-
রাখালেরা স্বপ্নকে কর্মে পরিণত করে-
আর ওরা টাকা দিয়ে স্বপ্নকে কেনে।
রাখাল তাই অনন্য নজির এই ভূলেভরা বসুন্ধরাতে।
সে এই দুনিয়ার কুলি মজুর, খেটে খাওয়া মানুষদের প্রতীক।
সে এই দুনিয়ার সমস্ত ভেদাভেদ ভুলাতে চায়।
আজ সে নাবালক।
এই দ্বন্দের পৃথিবীতে সে সবে চোখ মেলেছে।
কিন্তু রাখালের চোখে বিদ্রোহের আগুন, তার জমে থাকা আকাঙ্ক্ষা;
ভুলেভরা পৃথিবীর আগাম দিনের চিরজ্বলন্ত মশাল হয়ে থাকবে।