একদা ছিল এক ভৈরব মাঝি
ছিল তার একটা স্বপ্নের কুটির
ছোট দুটি ঘর
মাটির প্রলেপ দেওয়া ভাঙা টিনের মাচা
সামান্য পান্তাভাত
আর কিছু লিচু গাছের পাতা
উনুন জ্বলত তার শুধু বেলা পরলে
অভাবের এই ক্ষণিকের সংসারে।
চালাত সে বৈঠা অজয় নদীর জলে
যা পেত তা দিয়ে তার সামান্য দিন চলে।
তারপর হঠাৎ একদিন বৈশাখ মাসের লগ্নে
নিকষ কালো আকাশ
নামলো বৃষ্টি,
তার সমগ্র ভার নিয়ে
গগন উত্তোলিত
মেঘ উৎসারিত
বজ্রকন্ঠে ভেঙে পড়ল আকাশ
সবকিছু যেন ফুলে ফেঁপে উঠেছে।
কালবৈশাখীর তাণ্ডবে চারদিক হাহাকার
ভৈরবের গৃহ স্তব্ধ
শুধু জানালা কিছুটা খোলা
উনুনের ধোঁয়া বাইরে বের হয়ে
বৃষ্টির জলে গন্ধ মেশাচ্ছে।
এরই মাঝে ঘটে গেল এক
অপ্রত্যাশিত ঘটনা।
ছোট্ট একটি চড়ুই পাখির ছানা
বৃষ্টির জলে বুক ভাসিয়ে
একটা আশার আশ্রয়ে এসে বসল
ভৈরবের বাড়ির জানালায়।
ভৈরবও তাকে দেখে
অকস্মাৎ উৎসাহিত হয়ে উঠল
অদৃষ্টের খেল কী গভীর।
সে তাকে স্বাগত জানাল।
কিন্তু এলনা হাতে।
চঞ্চল সে ক্ষুদে কনা বসল-
তার বারন্দায়
সে তার জন্য কিছু খাবার দিতে গেলে
সে এলো না কাছে
শুধু উড়ে গেল এক কিঞ্চিৎ ডাক দিয়ে।
অদৃষ্টের একি ভারী অসংলগ্নতা
যে কাছে এল সাহায্যের জন্য
আশ্রয় পেল
কিন্তু ধরা দিলনা।
ক্ষণিকের সাথী হয়ে
উড়ে গেল অন্যত্র।
জানান দিয়ে গেল কিছু।
বৃষ্টিভেজা এই স্বর্গে
তারাও যে সাড়া দেয়।
দেয় খানিকটা আনন্দ
নিজেদের সংসারের হালে করে অনেক কিছু
অবশেষে ঝড় থামল
থামল বজ্রকণ্ঠের ডাক
কিন্তু অদৃষ্টের দেওয়া এই ক্ষণিকের চমক
এই অসংলগ্নতা
বুঝিয়ে দেয় অনেক কিছু।