চারিদিক ঘোর অন্ধকারে ঢাকা বহিছে শীতল বায়ু
অচেনা পথে চিন্তায় পড়ি এই বুঝি গেল মোর আয়ু!
একলাই চলেছি এমন পথটি ধরে সাথে নাহি কেহ-
কাঁথা বালিস আর টাকা কড়ি কিছু সঙ্গে দুর্বল দেহ।
হাঁপাতে হাঁপাতে সন্ধান পেয়েছি বালুচর ঐ গ্রামটি
আর সম্মুখে মোর দাঁড়িয়ে আছে অচেনা সেই বাড়িটি।
কি করে ঢুকিবো অমন বাড়িতে খুঁজে পাই না তো কূল?
লোহার গ্রিলে আবরিত চারপাশ আবল্যে হই যেন বেকুল।
হঠাৎ খাকি পোশাকে ভেতর থেকেই এক লোক এসে বলে-
কি চাইয়ে এত রাতে আপনার? মতলব লাগে মনে ছলে।
হৃদ্য স্বরে বলি, না ভাই! কিছু না, চাকরি জন্য এলুম
হোঁদলা সাহেব দিয়েছে ঠিকানা দেখি বেশ বেমালুম।
নিচু স্বরে গেছে তাঁর উৎকন্ঠা হাসি দিয়ে সে বলে-
আপনি আসারি খবর শুনে তাই রেখেছি গেটটি মেলে।
ঐ গোটা চেহারা মিশ্রিত তাঁর লজ্জায় মিথ্যের আবছায়া
প্রাঞ্জলি জড়ায়ে ধরেছে হাত করি যে একটু মায়া।
নিমেষে গলেছে মোর দিয়েছি ব্যাগটা হস্ত এগিয়ে-
শিষ্ট আচরণে চলছি পিছু দিলো কক্ষ দেখিয়ে।
একেলা ঘরে থাকিনি শুকাচ্ছে মুখ হচ্ছি লোমাঞ্চ-
লোমালিকার ডাকে করছেও গাত্র ভার লাগছে রোমাঞ্চ।
বেহালার করুণ ধ্বনি ঘর জুড়ে যাচ্ছে শোনা নীরবে
জানালাগুলো নড়ছে অবিরত বাতাস ঝড় উগ্রবে।
ক্ষণে ক্ষণে কে যে দিচ্ছে উঁকি? এপাশ থেকে ওপাশে
পেছন ফিরে তাকালে দেখি শূন্যতায় মিশছে নিমেশে।
ভয়ে ভয়ে গাত্র চমকে উঠে বক্ষ হয় নড়বড়
উচ্চঃস্বরে হাকালেও দারোয়ানের নেই নড়ছড়।
অট্টহাসি পুরো দালান জুড়ে প্রকম্পিত বারংবার
নুপুর পায়ে ঝনঝনিয়ে যে মনোহারিনী সমাহার।
আগমনে ঘর আলোকিত নয়নাভিরাম চোখে দেখছি
সমুদ্ভাসিত নারীর অঙ্গখানা রূপে সমুদয়ে ভাসছি।
দেখি মলয়পবন বহিল চারপাশ মহানিশার আঁধারে
যেন রূপধারিনী রমনী তাঁর পাপিষ্ঠ রূপ আনল উদরে।
ঐ প্রভেদনীর রূপে প্রপতন করছে যে ভয় অন্তরে
শেষে খোদার নিকট করছি আরাধনা ‘ বাঁচাও’ আমারে।
দোয়া-দুরূদ- কোরআনের বানী পড়েছি এক দু’নিঃশ্বাসে -
কেটেছে অন্ধকার অমানিশার ঘোর কিরণের আভাসে।
পাপাত্মা হল দূর বিভূতি বিপত্তি করল অবসান
চারিদিকে চক্ষু মেলে চাহি বহু পুরাতন দালান।
দেখি প্রাসাদ ঘেঁষে মল্ল কঙ্কাল রয়েছে মন্যু জুড়ে-
প্রতিশোধের দহনে জ্বলছে ওরা তাই বেরিয়েছি দৌঁড়ে।