প্রিয়! হে নদী তুমি সদা বহমান
তোমার বুকে নিত্য ছুটে চলে কতশত জলযান!

শুরু তোমার কোন সুদূরে...
ক্যাথে সাম্রাজ্যের সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গে ঢালে!
অতঃপর বয়ে চলেছ তুমি দেশ-দেশান্তরে
অনন্ত- অনাদি- নিরবধি!

হে নদী! তোমার জল পান করেই যে বেঁচে আছে জগতের সব সৃষ্টি!
তোমারি ভরসায় রচিত হয়েছে কত সমৃদ্ধ জনপদ!
তোমার আগলে রাখা মৎসকুল আহরণ করছে মানুষ
বেঁচে থাকার দুর্বার তাগিদে!
তোমার বুকে তরী ভাসিয়ে বাণিজ্যের বিস্তার হয়েছে সমগ্র বিশ্বজগতে!

হে নদী! তুমি পদ্মা, মেঘনা, যমুনা!
তুমি ব্রক্ষ্মপুত্র, বুড়িগঙ্গা, সুরমা!
তুমি কীর্তিনাশা, মহানন্দা, তীস্তা!
তুমি ধরলা, কাপ্তাই, কর্ণফুলী!
তুমিই গঙ্গা, তুমিই স্বরস্বতী!
তুমিই শীতলক্ষ্যা!
শত নামে শত দেশে তোমার শত- সহস্র রূপ!
কিন্তু সবার সেরা তোমার ঐ স্নেহময়ী রূপ!

তোমার জলে স্নান করে কেউ হয় পরিশুদ্ধ,
কেউ বিশ্বাসে তোমার জলে ডুব দিয়ে হয় পাপমুক্ত!

তোমার উপরে বয়েই গন্তব্যে পাড়ি জমায় মানুষ পরম নির্ভরতায়!
দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর গুণে
তোমার বুকে রেখাপাত করে মানুষ ফিরে যায়
তার আপন ঠিকানায় একরাশ আনন্দ নিয়ে!

তোমার দৃষ্টিনন্দন রূপ কবিকে বিমোহিত করেছে যুগে যুগে!
তোমার দু'পাড়ের বৃক্ষরাজির ছায়ায় বসে,
কত পথিকের ক্লান্তি দূর হয়েছে তার হিসেব নেই কারো নিকট!
তোমার শান্ত রূপ সাধারণ মানুষকে দুর্বার আকর্ষণে টানে সবসময়!
ছুটে যেতে চায় কর্মক্লান্ত মানুষ তোমার পানে একটু নির্মল স্বস্তির আশায়!
তোমার জলে খোলা আকাশও যেনো তার নিজের প্রতিবিম্বকে দেখে নেয়!
তোমার জলে শেষ আলোকরশ্নিটি ফেলে
সূর্য্যিমামা বিদায় নেয় সেদিনের মতো!
তোমার ঢেউয়ে স্পন্দন জাগে শিশুর চপল হৃদয়ে!

হে নদী! তুমি পাশে ছিলে বলেই আমরা ছিলাম
হে নদী! তুমি পাশে আছ বলে আজও আমরা আছি
হে নদী! তুমি থাকবে পাশে থাকবে যতদিন মোদের
যতদিন তুমি তৃষ্ঞা মেটাবে, প্রয়োজন মেটাবে
ঠিক ততদিন মোরা থাকবো ধরণীর বুকে!

তুমি নিরন্তর অকৃপণভাবে উজাড় করে যাচ্ছ তোমার অফুরন্ত ভান্ডার!
হে নদী! তথাপি আমরা হতে পারিনি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ!
বরং তোমার কৃপা ভুলে গিয়ে তোমাকে কলুষিত করে হয়েছি চরম অকৃতজ্ঞ!
তবুও মিনতি রইলো তোমার নিকট
কখনও নিঃশেষ করোনা তোমার অপার করুণাধার!
তোমার স্নেহময়ী রূপ বজায় রেখো চিরদিন।

নারায়ণগঞ্জ
২১/০৯/২০১৯