অণুতূল্য ক্ষুদ্রকায় কাব্য লিখতে পারি বলে,
কিংবা কবিতায় ভাবের রূপায়ন করতে জানি বলে,
অথবা কল্পলোকের বিহঙ্গের ডানায় ভেসে-
সৃষ্টিশীল উর্ধ্বপানে ক্ষণে ক্ষণে উড়ে বেড়াতে বাঁধা নেই বলে
বিপর্যস্ত পৃথিবীর দুর্বার অসহায়ত্ব আমাকে ছুঁতে পারেনি!
আজ স্বপ্ন আছে বলেই হয়তো
অকস্মাৎ মন্ত্রের সাধন এ গৃহবন্দী দশা
আমাকে একাকীত্বের দুঃসহ কঠিন শীতল আবরণে
আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে হতাশার অথৈ অতলে নিমজ্জিত পারেনি!
আজ হয়তো বাসস্থান, অন্ন আর অর্থের
নিশ্চিত যোগান আছে সুরক্ষিত আছে বলেই
পীড়ার বদলে সুস্বাস্থ্যের ইতিবাচক ইঙ্গীত পাই!
নতুবা ক’জোড়া উদরের প্রত্যহিক সাধন যোগাতে
গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে দুঃসাধ্য বোঝা ঠেলে
অথবা প্রাণের সাথে একতরফা প্রহসন করে
আজ, অন্যের স্বার্থান্বেষী প্রবৃদ্ধির চরকায়
শ্রমের প্রসাধনী মেখে
ক্রমেই পিষ্ট হতাম দিনের পর দিন!
ক্ষুধা আর দারিদ্রের মেরু আকর্ষণে অস্তিত্ব বিলীন হতো
অর্থনীতির ভঙ্গুর মেরুদন্ডের কশেরুকার অবতলে!
ভাগ্যবান বলেই হয়তো আজও সংসারের দুশ্চিন্তা
রক্তের ঊর্ধগতিকে অপ্রতিরোধ্যে করে তুলতে পারেনি!
অদৃশ্যের অপার অদৃষ্টের কৃপায়
স্থিতিশীল এখনও এ ঘটনাবহুল জীবন!
চেতনাশীল, দগ্ধ এ হৃদয়!
আজ যদিওবা ঝড়ের প্রকোপ ডানা ঝাপটায়!
শ্রেষ্ঠাংশে কেবল সুশীতল বাতাসই ছুঁয়ে যায় আমায়!
উপুর্যপুরী প্রলয় আঘাত হানতে পারে না
জীবনের জোড়াতালি দেয়া এ ছিন্ন পালে!
জীবন এখনও সুসজ্জিত রয়েছে বলেই
হৃদয় তাকিয়ে থাকে আজও অসম প্রেমের পানে!
রতিসুখের চরম অভিলাষ তাই এখনও অস্থির করে তোলে আমায়
কালবৈশাখীর আলোক ঝলকানো রিমঝিম বৃষ্টিবিধুর মধ্যরাতে!
গৃহবন্দী জীবন তাই আমার এখনও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের!
কারণ ক্লান্তিবিহীন শায়িত দুপুর কাটে এখন!
অশুরের দল এখন তাদের হৃদয় হননের বাণ ফুরিয়েছে!
আমার রাত কাটে এখন সুস্বপ্নে পুরোপুরি বিভোর হয়ে,
আরেকটি ঝঞ্ঝাবিহীন, মনোরোম সকালে প্রস্ফুটিত হবার প্রত্যাশায়!