সাঝের বেলা শান্ত সমুদ্রকে উত্তাল করে
আঘাত হানবে ঘূর্ণিদানব বুলবুল!
তার নির্মম তান্ডবে লন্ড - ভন্ড হয়ে যাবে
সাজানো -গোছানো প্রকৃতি মায়ের আঁচল!
গ্রাস করবে সে সমুদ্র উপকূলের হাজারো মানুষের
জীবন- জীবিকার শেষ সম্বলটুকু!
তবুও থেমে থাকবে না তার হিংস্র ধ্বংসলীলা!
ছুটে অগ্রসর হবে সে ইট -পাথরের
আভিজাত্যের দাপটে বাস করা জনগোষ্ঠীর নগরে!
দুর্বার গতিতে সে ছুটে চলবে,
আর ভেঙ্গে চুরমার করে,
উড়িয়ে নিয়ে ঠুনকোভাবে আছড়ে ফেলবে অসহায় মৃত্তিকার বুকে
যাকিছু তার পথ আগলে দাঁড়ায়!
সূর্যের সাথে শত্রুতা করে
একাত্ন হবে তার সাথে আকাশের হুংকার ও প্রবল বারিধারা!
চারিদিকে নেমে আসবে মহাপ্রলয়ের আবহ!
জনজীবন হয়ে উঠবে দুর্বিসহ!
জীবন-যাত্রা হয়ে যাবে স্থবির!
সিক্ত বস্ত্রে পরিজনের দেখা পাবার জন্য ব্যকুল হয়ে উঠবে
আতংকিত, দিশেহারা, অভুক্ত জনগণ!
সভ্যতার চাবিকাঠি নিখোজ হয়ে অাঁধারে নিমজ্জিত হবে গোটা জগৎ!
মনে হবে যেন আঁধারের ভয়ংকর দানবও ছুটে এসেছে পিছু পিছু!
বারে বারে হাওয়া বদলের খবর জানান দিতে থাকবে আবহাওয়া খবরীরা!
অবস্থা হতে থাকবে আরও কঠিন থেকে কঠিনতর!
অথচ উত্তরে -পূর্বে চিত্র তখন অন্যরকম!
কারও সর্বনাশের কালে কারও যে চলে পৌষ মাস!
এটাই তো জগতের অপরিবর্তনীয় নিয়ম!
বৃষ্টি -নেশা-ভরা সন্ধ্যা বেলায় তাই কেউ কেউ
আয়েশে চায়ে চুমুক দিয়ে ধ্বংসযজ্ঞের খবর নেবে!
অপ্রতিরোধ্য বুলবুল তাদের কাছে যে
মূর্তিমান আতংক সেজে আসতে পারেনি!
কিন্তু তার সহচর বাতাসের শীতলতায় আমেজে মেজেছে অনেকে!
এ যে এক অদ্ভুত বৈপরীত্য!
যে বাতাস কারও ঘরের খড়কুটো উড়িয়ে নিয়ে
তার বিনিদ্র রজনী পার করার ব্যবস্থা করে,
সে বাতাসেই কেউ শীতল আবেশ নিয়ে
প্রশান্তির নিদ্রা যাবার আয়োজন করে!
প্রকৃতির এ পক্ষপাতমূলক চরিত্রই তো দেখে আসছে সকলে চিরদিন!
অতঃপর একসময় মানব বুলবুলদের মতো ঘূর্ণিঝড় বুলবুলকেও নিতে হবে প্রস্থান!
রৌদ্রের হাসির ঝলকের দেখা মিলবে তার প্রয়ানে!
অতীতের সকল ঘূর্ণীদানবের মতো তারও ক্রমে ক্রমে ক্ষয় হবে!
তারও বিধ্বংসী রূপ মুষড়ে পড়বে একসময়,
কিংবা অতি শীঘ্রই!
সাধারণের সাথে মিশে গিয়ে তাকেও হারিয়ে যেতে হবে একসময়
যেমন করে হারিয়ে গেছে ইতিহাসের অনেক ভয়ংকর মানবরূপী দানব!
সিফাত আহমেদ
৯/১১/২০১৯
রাত ৮ টা ৩৩ মিনিট
নারায়ণগঞ্জ