কষ্ট, আমাকে আহত করো যতো পারো,
কখনোই তুমি আমাকে আর কাবু করতে পারবেনা।
সেই কবে তোমার হৃদয়ের কাছে তাঁবু ফেলেছি,
মেলে দিয়েছি আমার হৃদয় নীলোৎপলের ধরনে।
একে একে সবগুলো পাপড়ি তোমার হিংস্র নখে তুলে নাও,
ছিরে ফেলো; হৃদয় থাকবে প্রতীবাদ হীন।
আজ অব্ধি, হ্যাঁ হ্যাঁ , এতো দিনেও কিছুতেই কাউকে বোঝাতে পারিনি
আমার হৃদয়ের নিঃসীম ব্যাকুলতা। কতবার চোখে সেই ভাষা এনে তাকিয়েছি
আপন জনের দিকে, যা নিভৃত তম উপলব্ধিকেও টেনে তোলে প্রত্যক্ষে,
যেমন গহন ডুবুরি সমুদ্রগর্ভ থেকে বয়ে আনে মূল্যবান গুপ্ত সামগ্রী।
আমার আকাঙ্ক্ষা গুলি কি আহ্বান জানায় নি
একটু ভালোবাসাকে? ভালোবাসার ঢেউ আছড়ে করেনি
বারংবার আমার শুষ্ক শীতল ওষ্ঠপুটে?
এ আমি স্বীকার করি কীভাবে? আমার দিন রাত্রি
নিবেদিত শুধু এক পসলা ভালোবাসার উদ্দেশ্যে।
আমার সকল কাজেই ভালোবাসার ছায়া খেলা করে,
এই সত্যের নগ্নতা আপনজনের দৃষ্টিতে দেখতে
পাওয়ার আশাকে দাফন করেছি বারংবার।
চৈত্রের দুপুরে চোখ পুরে যায়, তবু চেয়ে থাকি
একটু ভালোবাসার আশায়। সন্ধার বুকে
হৃদয় আমার ছটপটে পাখী, নিজের আখাঙ্খাকে
গলা টিপে হত্যা করি। বহুদিন যোগফল নিয়ে ভেবেছি,
অথচ পুনঃ পুনঃ বিয়োগ করতে হয়,
বিয়োগান্ত হয়ে যাচ্ছে অনেক কিছুই, সতেজ সুখগুলোকে
কতবার দেখেছি বাই সাইকেল চালিয়ে হারিয়ে গেছে
দিক্‌চক্রবালে। হঠাত কোত্থেকে দুঃখরা বিছানায়
এসে আমার বুকে মাথা রেখে শোয়।
অপ্রেমের মরুভূমি থেকে হেঁটে হেঁটে কষ্টের কাছে
পৌঁছেছি দিন-রাত্রির সন্ধিক্ষণে।
সারাটা শহর শত্রুতা সাধে, মধ্যরাত কাঁদায়
প্রতিদিন। সময় পোহাই শূন্য ঘরে, যখন তোমার
প্রণয়ী দু-চোখ পরলো আমার তৃষ্ণাতুর চোখে,
মৃত্যু গান গায় রাজকুমারীর বেশে, হননের
তীব্র স্পৃহা ভুলে। অমন চোখের জন্য অপলক
চোখে সু-নিশ্চয় শতাব্দীর পর শতাব্দী ব্যাকুল
প্রতীক্ষা করাই যায়। আমার দু-চোখে তোমার
পূর্ণ দখল এখন,তোমার শরীরের ছিল
বসন্তের পুষ্পিত বিলাপ, দুঃখের কবল থেকে
ছুটে এসে তুমি দেখলে আমারও কিছুই নাই
দুঃখ ছাড়া তোমাকে দেবার। একটি চুম্বন আমি তোমার নিকট
বারংবার প্রার্থনা করতে গিয়ে দেখেছি,
দুঃখরা তীব্র চুমু খায় আমাকে প্রতিবার। আর যখনই
তোমাকে বুকে নিয়ে স্বর্গসুখ নিরিবিলি পেতে চাই,
শুন্যতারা নরখাদক গিলে খায় আমাকে, দেবী!
তোমার চরণ তলে আমার বিনিত প্রার্থনা গুলোকে
তোমার পূজার অর্ঘ ভেবে আশ্রয় দিও একটু,
নিষ্ফল আমি, কি ফল ফলবে
অকালেই গাছ বজ্র দগ্ধ হলে। অভিশপ্ত
জীবনে ঋতু না ফুরোতেই গোলাপ ফুরোয়।
মৃত্যু নিয়ত জীবনের প্রতিবেশী। এই মৃত্যু ময়
মুহূর্তে, প্রিয় তোমার বুকের এককোণে একটু
যায়গা দিও। তোমার ভালোবাসার পূজা করবো
করবো না কথার খেলাপ কখনো। ফিরিয়ে আনতে
চাই দীর্ঘ মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া দগ্ধ চিৎকারের
মতো আমার আহত অভিমানী স্বপ্নগুলিকে।