নারী

যে কাজটি আমরা করতে পারি না, সে কাজটিই করো তুমি।
তোমার কাজের কোনো মূল্য দিই না,
দিই না ভালোবাসামাখা একটু স্বীকৃতি।

জন্ম থেকেই হাতে শেকল, পায়ে বেড়ি, মগজে দিয়েছি 'অবলা' ঢেলে।
তাই তুমি ঘরবন্দি গৃহিণী, বন্দি থাকো আঁতুর ঘরে।
কারণ তুমি নারী।

যা কিছু আমাদের চোখ এড়ায়, এর দায়ভার নিয়ে না-ও তোমার কাঁধে।
জীবন জোয়াল টেনে যা-ও জীবনভর, একটু সুখের তরে।

আমাদের দায়িত্বের সীমানা, যেথায় টানি রেশ;
সেখান থেকেই তোমার শুরু, কর্তব্য হয় না শেষ।
তাই তুমি নারী!

কৈশোর পিতৃশৃঙ্খল, যৌবন পতিশাসন, প্রৌঢ়তা সন্তানের করতলে;
ওরা ছকে বেঁধেছে তোমার জীবন, বন্দি চারদেয়ালে।

তুমি সামন্ত প্রভুর ভূমি;
পুরুষ ঈশ্বরের কৃষিজমি;
ধর্মগুরুর তেঁতুলতলা;
কারণ তুমি নারী, অবলা।
তুমি প্রলেতারিয়েত সর্বহারা।

হে ঘুমের দেবতা হিপনোস,
অনেক হয়েছে, এবার ভাঙাও ঘুম।
আড়মোড়া দিয়ে জেগে উঠুক নারী, চোখ মেলুক দিগন্তজোড়া,
হাত প্রসারিত করুক দশদিগন্ত, সোজা করুক শিরদাঁড়া।

(স্মারক গ্রন্থের জন্য)