-:ভালোবাসা একটু গভীরে:-
কলমে: শ্যামল সরকার
কী মোহে ছুটে চলেছ সারাক্ষণ?
আনন্দ, ভালোবাসা কিংবা সুখ!
বিস্তীর্ণ লোমশ বুকে কী পাও মাথা গুঁজে?
এ কি ভালোবাসা, ক্ষণিক আনন্দ না কি দুখ?
ভালোবাসা কি এত বিনত!
ভালোবাসা অমরাবতীর অমিয় সুধা;
ভালোবাসা অনেক গভীর, অনন্ত।
ভালোবাসার স্বর্গ সুধায় কি হতে চাও প্রমত্ত?
তবে বুকের ভেতর, আরেকটু গভীরে চলে যাও,
দেখো, একটা নীল হৃৎপিন্ড, বিষে ক্ষত বিক্ষত।
হৃৎপিন্ডের মধ্যে সরোবর;
ওটা নিষ্পাপ বাম অলিন্দের অশ্রুজল,
পদ্মাকরে ফুটে আছে কত নীল কমল!
এক পাষাণী এ হৃৎপিন্ডকে করেছে ছিন্নভিন্ন;
হৃৎপিন্ডটার লাল রঙ, এখন নীল মায়াবীর বিষে ।
স্বর্গ-সুধা চাও! নিয়ে নাও যত পারো এ হৃদয়কে মন্থন করে।
ছিন্ন হওয়া নিলয়ের এক টুকরো দিয়ে
অমিয়-সায়রে গড়েছি ছোট্ট এক পাহাড়, নীলাদ্রি।
যদিও সে পাহাড় হতে চায়নি,
চেয়েছিল নিলয়ের টুকরো হয়েই বাঁচতে।
কারণ পাহাড় স্হানু, হৃৎপিন্ড চলিষ্ণু;
পৃথিবীতে কেউ চায় না স্হানু হয়ে থাকতে।
নীলাদ্রির মুখরিত অশ্রুধারা বুক চিরে, কলকল ধ্বনিতে, মিশে গেছে সরোবরে।
হৃৎপিন্ডের তাপে পাহাড়ে প্রাণের সঞ্চার;
জন্ম নিয়েছে ঘন অরণ্য, কতো সুন্দর শ্যামল ঘেরা!
আছে দুইজন একান্ত বিশ্বস্ত সহচর;
ওদেরকে সৃষ্টি করেছি জন্মান্ধ করে, ইচ্ছে করেই;
একজন 'একা', অন্যজন 'বিজন'।
এখন আমি সাবধানী,
আমার অজান্তে কেউ এ গাঁয়ে যেতে পারে না আর।
হৃৎকম্পনের আবেশে জলাভূমিতে জলতরঙ্গ।
বেলাভূমিতে সূর্যস্নান করতে পারো ইচ্ছেমত;
কাটতে পারো ডুব সাঁতার, চিৎ সাঁতার অলজ্জ;
মেতে উঠতে পারো জলকেলিতে নিহঙ্গ।
গোধূলি লগ্নে পাহাড় ঘিরে মেঘাচ্ছন্ন নীলাকাশ
অনায়াসে জলবিহার করতে পারো চারপাশ
তোমাকে দেখবে না কেউ, কারণ ওরা অন্ধ, জন্মান্ধ।
হৃৎপিন্ড জেগে থাকে সারারাত।
তাই এ গাঁয়ে নেই কোনো আঁধার।
তবে তুমি যদি হও নিশি অরণ্যচারী,
অরূপ আঁধারে অবগাহনে পিয়াসি,
যেতে হবে অরণ্যের আরেকটু গহীনে।
আমার আলো তেমন একটা পৌঁছায় না সেখানে।
ওখানে তোমার অপেক্ষায় নিধুবন।
নীলাম্বরী হয়ে সাজাতে পারো বাসর, নিঃশব্দ আঁধারে;
তবে জোনাকীর দল তোমাকে ঘিরে থাকবে অনুক্ষণ।
ভালবাসায় সিক্ত হবে তোমার আরাধ্য প্রিয় সিঁথি
আমার এ সাজানো বাগানে জমেছে অনেক পলি,
যদি করতে পার যতনে চাষ!
মৃত্যুর পরও এখানে গড়তে পার
অনন্ত ভালোবাসার স্বর্গীয় নিবাস।