# মল্লিকা দেবী জিতে গেছে
এসেছিল দক্ষিণের নোনা পানি থেকে একটু বাঁচার আশায়।
এ-হাসপাতাল ও-হাসপাতাল করতে করতেই পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ে সূর্যঘড়ির ছায়া।
ডাক্তার নার্স আয়া
ব্যস্ত সবাই মহাব্যস্ত এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি।
ছুটাছুটির এ বিড়ম্বনা
মল্লিকা দেবীর ভালো লাগে না।
তার মন সরস সঘন সফেদ কাশবনে;
প্রজাপতির পাখার সব রঙ নিয়ে পাখির ডানায় উড়ে বেড়ায়,
দূরান্তের নীল গায়।
ঘন শ্যামলতলে
স্রোতস্বিনীর অথইজলে;
গা ভাসিয়ে চলে
দূর অজানায়।
স্মৃতিগুলো তার হেলে যাওয়া বটের ডালে
অহর্নিশ দোলা দিয়ে যায়।
অবাধ্য সময় কেড়ে নিয়েছে সোনালি অতীত।
মল্লিকা দেবী ফিরে পেতে চায় পুরনো অতীত,
পুরনো কৈশোর।
শৈশবের মল্লিকা শুকিয়ে গেছে সেই কবে,
শুকনো ফুলের গন্ধ ভেসে আসে নাকে,
স্মৃতি-বিস্মৃতির দোলাচলে।
শৈশবের সানুতল ছেড়ে সে বেয়ে উঠে পাহাড়ের গাঁয়।
সবাই জানে এ গাঁয়ে কিছুটা সময় বেঁচে থাকা যায় নির্ভাবনায়।
মল্লিকা দেবীর পৃথিবীটা এখন ধূসর,
ছড়ানো ছিটানো সব ইট পাথর।
যৌবনের স্মৃতি-সুখের ডানা
কালের প্রবল ঝড়ে ভেঙে পড়ে।
বসন্ত চলে গেছে বড়ো অসময়ে,
সে আরেকটু সময় বেঁচে থাকতে চায় প্রাণ ভরে।
যৌবনের প্রিয় পাহাড় ছেড়ে উঠে চূড়ায়,
একটু বাঁচার আশায়।
কে না জানে, চূড়া থেকে পৃথিবীটা স্পষ্ট দেখা যায়।
মল্লিকা দেবীর পৃথিবীটা এখন আরও বেশি ধূসর বিবর্ণ।
তার রক্ত কণিকা ধীরে ধীরে নীল হয়ে গেছে।
সে কর্ণফুলির জলে ভেসে ভেসে,
আবার নোনা জলে মিশে গেছে।
আজ মল্লিকা দেবী জিতে গেছে।
মহাকালের অতলে আরো একটি পালক খসে পড়ার ধ্বনি অচেনা তরঙ্গে ভেসে যাচ্ছে ডুবে যাচ্ছে।
# শ্যামল সরকার