অনন্তঃ-- লাবণ্য ! কি ভাবছো?
আবার হাসছো কেন !
লাবণ্যঃ-- আচ্ছা, প্রেম কি ?
অনন্তঃ-- আমি কি দার্শনিক ? আমার জন্য কঠিন প্রশ্ন নয় কি?
লাবণ্যঃ-- তোমার অনুভবটাতো বলতে পারো !
অনন্তঃ-- তোমার আসাটা অন্ধকার বিদীর্ণ করে ভোরের সূর্যের উঁকিতে আলো ছড়িয়ে সবকিছু বর্ণিল করার মতো চঞ্চল আনন্দের।
প্রেমও তোমার মতো মনের কবেকার অনন্ত অমাবস্যার কৃষ্ণতাকে ছিন্নভিন্ন করে বর্ণালীতে দীপ্ত করে, তাবৎ পৃথিবীর সবাইকে ভালোবাসতে শেখায়। সবকিছুর মায়া অলিন্দে বসতি গড়ে।
লাবণ্যঃ-- আর অপ্রেম কি?
অনন্তঃ-- মিথ্যাচার, কুহক মুখোশে আবৃত নির্দয় স্বরূপ নিয়ে নিন্দিত লুকোচুরি। ছলাকলা, মখমলে সুরভিত আশ্বাস, অনর্থ কথার ফুলঝুরি আর রূঢ়তার তন্তুজালে অবরুদ্ধ ম্রিয়মাণ বিশ্বাসের অপমৃত্যু।
লাবণ্যঃ-- প্রেম অপ্রেম বহে সমান্তরাল। মানবতার অতনু দেহ ক্ষতবিক্ষত হয় নিরেট নিষ্ঠুর অপ্রেমে। প্রেম বৈরী বাতাসের স্রোতে আলো ছড়ায় সাঁঝেরবাতির মতো মিটমিট জীবনের স্পন্দনে।
আর বিরহ?
অনন্তঃ-- বঞ্চনার অন্তর্দাহে কৃষ্ণ মেঘমালায় আকীর্ণ আকাশে বর্ষার ধারার মতো হৃদয় হতে উৎসারিত নির্ঝর বেয়ে চোখে নামে বৃষ্টি। ছলাৎছলাৎ জলে নদীর মতো হৃদয়ে ভাঙ্গনের শব্দ বাজে নিরন্তর। দুর্বিনীত কালোবেলায় গতায়ু পথিক চাঁদের মতো নিষ্প্রভ হয়ে যায় তিলে তিলে গড়ে তোলা বিশ্বাস। মন ভাবে, চাঁদ আর নক্ষত্রহীন সায়াহ্নের কৃষ্ণ অন্ধকারে কোথাও কেউ নেই।