ঃ লাবণ্য !
___ বলো, অনন্ত।
ঃ ধরো, হঠাৎ অপ্রতিরোধ্য ঘূর্ণিতে খানখান হয়ে যাওয়া রঙিন প্রজাপতির ডানার মতো আমাদের বুকের অলিন্দে পোষা স্বপ্নগুলো ছিন্নভিন্ন হলো।
___ হঠাৎ ঝড় তুফান উঠবে কেন ?
ঃ তুমি দেখেছ সাধারণ মধ্যবিত্তের মেধা, পরিপাটি বেশ, আত্মমর্যাদাবোধ, নান্দনিক কর্ম আর সুবাসিত কথামালার ইন্দ্রজাল। তুমি দেখনি তাদের অন্তর্দাহ, দেখনি টানাপোড়েনে
লোনা অশ্রুতে আদ্র মায়ের আঁচলখানি, বাবার উদাসী দীর্ঘশ্বাস।
___ আমিও দেখেছি নিয়ন আলোর ঔজ্জ্বল্যে দর্পিত জীবনের ঔদ্ধত্য জীবনাচরণ। অতৃপ্ত মনের চির ভিখারির তৃষ্ণার্ত আকাঙ্ক্ষারা দাহ করে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার।মেকি আস্তরণের মুখোশের অড়ালে বিভৎস মানুষেরা অনবদ্য হৃদয়কে ব্যবচ্ছেদে ছিন্নভিন্ন করে ক্ষুরধার কুটিল শস্ত্রে। কিনে নিতে চায় গৌরব গাথা কদর্য কৃষ্ণ মুদ্রায়। প্রেতের মতো আকন্ঠ পান করতে চায় মানুষের তাবৎ সুখ নির্যাস।
তুমি কি আমৃত্যু নির্বাসনে রেখে দেবে আমায় সেই শোভিত কারুকার্যময় নরকে ?
ঃ লাবণ্য ! আমরা প্রখর স্রোতস্বিনীর দুই তটের, দুই মেরুর, দুই জীবনধারার বাসিন্দা। আমাদের ভালোবাসতে নেই, স্রোতের প্রচণ্ডতায় হারিয়ে যেতে হয় সমুদ্রের অসীমে।
___ অনন্ত ! আমরা হৃদয়কে করবো প্রসারিত। ছুঁয়ে হাতে হাতা গড়বো নিরেট বিশ্বাসের সেতুবন্ধন। হিংসাদ্বেষ, অহমিকা, শোষণ, অনিয়মের স্রোতে একদিন জাগবে সবুজের দ্বীপ। থরেবিথরে কিশলয়ে ছেয়ে যাবে আমাদের স্বপ্নের দ্বীপখানি, আমরা মুঠোমুঠো আকাশের ঔদার্য বিলাবো জনারণ্যে। এক নন্দিত পৃথিবীর রূপকল্প জেগে উঠবে তোমার আমার বিচিন্তায়।