পাহাড় শীর্ষে দাঁড়িয়ে দেখছে অনন্ত।  নৈসর্গিক অপরূপ রূপ আর মানুষের খণ্ডিত জমি,
অসাম্যের উঁচুনিচু নিবাস, নগণ্য ক্ষুদ্র অবয়বে সংকীর্ণ পথে চলছে মানুষ।
যেন দূরবীনে দেখা অচেনা দূর কোন পৃথিবী।

শুধালো
ঃ  হে সমুদ্র !
শান্ত সৌম্য অপার নীলে মুগ্ধতা ছড়াও তুমি,
কখনোবা আনন্দে প্রাণচাঞ্চল্যে কোলাহলে উচ্ছল।
প্রাণের অবারিত সম্ভার বুকে নিয়ে  তাবৎ পৃথিবীর জঞ্জাল সহে নিচ্ছো হাজার বছর ধরে।  

ঃ ওহে অরণ্য !
নিটোল সবুজের প্রশান্তির ছায়া আর নাম না জানা বুনো ফুলের আচমকা সুগন্ধ বিলাস তোমার, আমাকে নিয়ে যায় বারংবার কোন কাহিনীর দেশে ----
যেখানে নেই ছদ্মবেশ, হিংসাদ্বেষ, নেই জিঘাংসার রূঢ়তা, সীমাচিহ্নে খণ্ডিত আত্মিক  বাঁধন, নেই অপমৃত্যু আর লাঞ্ছনার কদর্যতা।

ঃ হে অনন্ত আকাশ !  
উন্মুক্ত নীল সামিয়ানার বিশালতায় ওড়াও মুক্তমনের বিহঙ্গ।
নিঃসীম ঔদার্য তোমার কেন দাওনা তুমি বিভাজিত, হিপোক্রেট মানুষকে?

সমুদ্র বলে
---- খণ্ডিত পৃথিবীর মাঝে আমি মিলনের তরী নিয়ে যাই দেশদেশান্তরে,
মেঘমালায় আদ্র করি উষর মৃত্তিকা, আহার্য  বিলাই,
মুছে নিই মেঘের ধারায় মলিন কদর্যতা অখণ্ড ধরণীর।  

অরণ্য বলে
---- আমাতে বিলীন হয় জাগতিক তৃষ্ণা, হিংসার অধরা অনল।
স্বস্তির মিলন মেলায় পাখি গায় সুমধুর। ঝিঁঝির তানে, শান্তির ছায়ায় ছায়ায় মন ছুঁতে চায় আকাশের উদারতা, পরমার্থ জীবনের সোপান।

আকাশ কয়
---- আমি অতন্দ্র নিশ্চুপ সাক্ষী তোমাদের দিবসরজনীর।
আমি সাক্ষী আনন্দ আর বেদনার, মিলন বিরহের, উত্তান পতনের, সৃষ্টি প্রলয়ের, যুদ্ধ সন্ধির, সংকট আর প্রাপ্তির, মহাত্মা দুরাত্মার, হিংসা ও মমতার।

ঃ মানুষের সংকীর্ণ প্রবৃত্তির বেড়াজালে দ্বিচারিণী পৃথিবী দুলছে, আলো আর অন্ধকারের দোলাচালে অনন্তকাল।
সৃষ্টির কপোতেরা ছুটে যায় নিষ্ক্রিয় নির্জনে, সীমানায় খণ্ডিত ধর্ম বর্ণ জাতি আর
অন্তরাত্মা,
লভেনা দর্পিত মানুষ প্রকৃতির ত্যাগের ধর্ম,
মানবতা অধর্মে সংকটে পোহায় বিষন্ন প্রহর, হিপোক্রেসির কৃত্রিম আতর ছড়ায় ধূর্ত
ধর্ষিতা পৃথিবীর ম্রিয়মাণ বাতাসে।
হৃদয় দহে, স্বপ্নিল ইচ্ছেরা বিচূর্ণ হয় বারংবার।