স্বপ্নরা আমার শুধুই উড়াল দিতো চৈতালী ঘূর্ণির মতো আলোময় সাতসমুদ্রের ওপারে
--- হাজার বছর ধরে বয়ে চলা বৃদ্ধ অন্ধকার
এক চিলতে রঙিন আলোয় যদি রাঙানো যেতো!
লাজুক নিশীথচারী চাঁদও আমায় ডাকতো
ছায়ালোকের বিস্তীর্ণ আলোর অভিসারে,
ইচ্ছে হতো ব্রহ্মাণ্ডের বিশাল ঔদার্য এনে ছড়াই আত্মকেন্দ্রীক মানুষের মনে মনে,
বটের তলার আড্ডার পাশ কেটে মহুয়া যখন যেতো শেষ বিকেলে সান্ধ্য আরতিতে
তখন তার রজনীগন্ধার মতো স্নিগ্ধতায়
স্নাত হয়ে যেতাম শুদ্ধতার ঝর ঝর নির্ঝরে,
ইচ্ছে হতো সবুজের নিভৃতে হারিয়ে যাই
জীবনের অলিগলি বেয়ে দু'জন অনিবার্য অস্তাচলে।
একদিন মায়ের গর্ভতন্তু ছিন্ন করার মতো উড্ডীন চিলের মতো ছুটে যাই দূরে আলোভুক তারুণ্যে স্বপ্নময় রূপকথার রাজপুরে,
রাজকুমারীর নূপুর নিক্কন, গোলাবি ঠোঁটে পরিমিত বাঁকা হাসি, কাঁচের কৌটোয় পোষা কৃত্রিম সুগন্ধ বিলাসে তার আমি হয়ে যাই বিমুগ্ধ ক্রীতদাস,
আমি বিজয়লিপ্সু সাঁতারুর মতো সমর্পিত হয়ে যাই স্ফটিক স্বচ্ছ জলকেলিতে,
আমি হারিয়ে ফেলি মস্তিষ্কের লক্ষকোটি নিউরন থেকে চাঁদ আর মহুয়ার অনাবিল লাবণ্য।
ছায়ার মতো শেষবিকেলে দীর্ঘ হয় বোধ
---কি লাভ বৈভব, খ্যাতি, বিদ্যা, দাম্ভিক দর্পে আর রাজকুমারীর হীরক খচিত মুকুট দেখে!
পাহাড় শীর্ষে দাঁড়িয়ে দেখি এখন সবই তুচ্ছ, সবই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র স্বার্থান্ধ নরকের নগণ্য কীট!
আমাকে বিপন্ন রাতে দু'দণ্ড শান্তি দিয়েছিল ঐ রূপোলী চাঁদ,
মন্দাকিনীর তীরের দেবীর মতো নিষ্কলুষ মহুয়া
অবারিত সৌম্য যার হারিয়ে দিতো কুহক প্রমত্ততা, জীবনের লোলুপ লেনদেন, বৈপরীত্য,
উঁকি দিতো সরল জীবনে নির্লোভ মনুষ্যত্ব।