হাল আমলে মনে হয় আমার বক্ষ জুড়ে শুয়ে আছে
প্রাগৈতিহাসিক অবচৈতন্যের অচলায়ত কুম্ভকর্ণ,
স্কন্ধে আজন্ম ঝুলে আছে
কৃষ্ণ গুহার অপবাদের অনড় হিংসুটে বাদুড়,
আভিজাত্যপূর্ণ শিরস্ত্রান পরা সচল প্রেত
আমার প্রতিবেশী আপন প্রিয়জন।
মানুষের মুখোশের ভেতর কুকুর খেলে নিয়ত,
তোষামুদে লেজ নাড়ে,
নশ্বর ভোগের উপকরণ ভাগে তীক্ষ্ণ নখরে কাড়াকাড়ি,
খাইখাই নির্লজ্জ খাসলতে কর্কশ ঘেউঘেউ অনুরণন দুনিয়াজোড়া,
যেন তাবৎ তল্লাট ছেয়ে যাবে কুকুরে কুকুরে।
তরতাজা রক্ত ঝরে দাম্ভিক দ্বন্দ্বে,
ছিন্নমূল উদ্বাস্তু আশ্রয় ত্রাণ আশে ছুটে দিকবিদিক,
অস্থিচর্মসার শিশুর লোনা অশ্রুতে টলেনা ঘাতক মিসাইল,
একটুকরো স্বস্তির অভিযাত্রায়
ভূমধ্যসাগরে ভাসে ব্যর্থ নিথর প্রাণহীন দেহ,
খণ্ডিত পৃথিবীর কাঁটাতারের জাত্যাভিমানী সীমাচিহ্নে
ঝুলে অবুঝ অর্বাচীন।
স্বাতন্ত্র্যবোধ,ঔদার্যে কুণ্ঠা, যুদ্ধবাজ, নারীর সম্ভ্রম পীড়ন,
হিংসিত মিথ্যাচার, ধ্বংসযজ্ঞ আজ ধর্ষিতা পৃথিবীর অলংকার।
বর্ণিল পুষ্পিত বাগানে আজ নেই ফুলের সুগন্ধ বিলাস,
নেই দিলখোলা আপ্যায়ন চুল-ছেঁড়া দেনাপাওনার চৌহদ্দিতে,
বাঁধনহারা উড়ুক্কু লঘু সারস বনে অসহিষ্ণু অতুষ্ট মানুষ
ছুটছে নিয়মহীন নিঃসীম বিস্তারে।
এই অসংগতি দুঃসহ বিষবাষ্প হয়ে ঘূর্ণি ছড়ায়
তারুণ্যের প্রাণচঞ্চল নিষ্পাপ ফুসফুসে,
কোথাও কেউ নেই রুখিতে শানিত অস্ত্রসাজে সজ্জিত
এই দুর্বিনীত অশ্বারোহীকে।
নির্জীব নিষ্কর্মা বিরাট শিশু তুমি লাখো আরজি আরাধনা
ভ্রুক্ষেপ না করে খেলে চলো প্রতিকারহীন আপন খেয়ালে,
এই অনিয়মের নিয়মে মৃত্যুদণ্ডের লিপ্সায় নতজানু হয়েও
ব্যর্থ হই তোমার কাছে, হে নিশ্চুপ উপাস্য ঈশ্বর!
আকাশে সেই নীল স্বস্তির, আরণ্যক শীতলতা
কেড়ে নিতে পারেনি কোন দুঃসাহসিক দস্যু,
পাহাড় শীর্ষে ভোরের আলোর মহত্ত্বও
কৃষ্ণতায় আকীর্ণ করেনি কোন দুর্বৃত্ত
---- মানুষ শুধু হারালো তার মহত্তম মানবিক উত্তরাধিকার
ভিনগ্রহের বাসিন্দার মতো নিশ্চুপ রোবোটিক আত্মকেন্দ্রিকতায়।
আজ বড় বেশি ইচ্ছে করে
এই শোভিত কুহক মখমলে আস্তরণে আকীর্ণ
নিষ্ঠুরতার লুকোচুরি, হিংসার বাসভূৃম ছেড়ে
নামগোত্রহীন আরণ্যক আদিম মাটির মানুষ হয়ে যেতে
দুদণ্ড ঈপ্সিত অবারিত নিটোল শান্তির জন্যে।