একটি পথ,
সরু, লম্বা, দিগন্তবিস্তৃত একটি পথ।
পথের দু’পাশে সারসার কৃষ্ণচূড়া গাছ।
বসন্ত বিলাসে হাজার-আটটা ফুল
পথের উপরে রয়েছে বিছিয়ে, যেন
রুধিরে ছেয়েছে বিষাদ ছুপানো কূল।

এক উদ্ভ্রান্ত পথিক,
উসকো – খুসকো চুল, ছেড়া-ময়লা বেশে এক উদ্ভ্রান্ত পথিক।
পায়ের তলায় মখমলি সুখে বিছানো ফুলের পাপড়ি।
বসন্ত বুঝি এসেছে ধরার পরে?
পায়ের তলায় বসন্ত-সুখ, যেন
চলেছে তাহার আপন গৃহের তরে।

বহুকাল হলো হয় নাই বলা কথা,
পথিকের গলা ভুলেছে স্বরের খেলা
আজ এই পথে পায়ের তলায় লালে
কণ্ঠ-নদীতে বহিছে প্রাণের ভেলা!

কে রে ও ভেলায়, কেমনে তাহারে চিনি?
চোখের দৃষ্টি সহসা ঝাপসা কেন?
নাকি চোখ আজ ভুলেছে দেখার কথা
দেখাতেই তার সুখের অন্ত যেন!

কর্ণে বাজিছে বিষাদের গান
গাইছে পাখির দল,
আজ আকাশের ঈশান কোণায়
কৃষ্ণ মেঘের ঢল!

ওরে, মেঘ, তুই ঢাল আজ তোর  
বুকের যত ব্যথা,
ওরে, সমীরণ, থেমে থাক তুই
শুনবো মেঘের কথা!

এক উদাস গগন।
কালো, বিষাদ মাখা, নিম্ন দৃষ্টি এক উদাস গগন।
কী যেন হয়েছে আজ আমার দৃষ্টিহীন, সৃষ্টিছাড়া-রূপবতী মেঘের!
ওরে গগনের কালো মেঘ তুই
কাঁদ তুই মন খুলে, যেন
কান্নায় তোর লুটায় কঠিন ভুঁই!

ওরে, কৃষ্ণ মেঘের দল –
সরু, রাঙা এই পুষ্প বিছানো পথে,
আজ তোরা ঐ পথিকের সাথে চল।
ওরে, কৃষ্ণ মেঘের দল –
ঝরা পাতা ঝরা ফুলের সাথেই
ঝরা তোর অশ্রুর ঢল!