আমি যখন একদা তরুণ ছিলাম....
আমার দু'করতলে পুকুর ভরা পদ্মের মতো
রমণীয় কত জীবন-প্রণয়ের গল্পেরা ফুটে থাকতো;
আমার চোখের স্বচ্ছ আঙিনায় সমগ্র আকাশের নক্ষত্ররা
রোমাঞ্চকর গল্প ও বিপ্লবের আসর বসাতো;
আমরা দেবতাদের মতোন জন্মভূমি জুড়ে কোমল কত ঘাসের বিছানায়
চিৎ হয়ে শুয়ে আকাশের দিকে ছুঁড়ে দিতাম দ্বৈরথের ভ্রু-ভঙ্গিমা !
আমাদের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর মতোন
সতেজ যুবতীদের দেহ থেকে অনুভূত হতো
প্রশংসা ও প্রেমের মতোন মুগ্ধতার অপূর্ব উত্তাপ;
যখন আমরা কখনো তরুণ ছিলাম;
আজো আমার মধ্য-গগণের মতো এই সূর্য সময়ে
ছড়িয়ে রেখেছি একদা আমার সকল তরুণ মননের ছাপ;
তারুণ্যের মুখোমুখি আজো এ দু'পা গেড়ে দাঁড়াতে পারি
বলতে পারি আয় দেখি তুই কতটা সবুজ,
আয় কবিতার মতো করে প্রলাপ-পাঞ্জা লড়ি!
আমার মাঝে আজো তারুণ্যের বর্ণিল আবেগের যতো বিভা
সব বর্তমান; হারিয়ে ফেলিনি আজো, এবং তা বুঝতে পারি যখন
সন্তান বয়সী এক কিশোরী আমাকে দেখলেই
উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তার সমস্ত মুখশ্রী এক জ্যোতির্ময় উৎসব অঙ্গনের মতোন,
কি বললে খুশি হবো,
তা ভাবতে গিয়ে মুগ্ধকর লজ্জিত রাঙা হয়ে উঠে ছুটে পালায় সে;
ফিরে আসে হয়তো সদ্য লিখিত তার একটি কবিতার অনুমোদন
ও আমার কাছ থেকে নেবে বোলে কৈশোরিক সে মুগ্ধতার দাবীতে;
আর ঐ যে সদ্য এক যুবক, সেও, আমাকে দেখলেই
ছিন্ন করে তার বন্ধুদের মোহ-বৃত্ত, ছুটে এসে বলে,
শোনাও গীটারে, কিছুতেই ভুলতে পারি না যে তোমার লেখা ঐ গান,
বৃষ্টিতে ভিজে চলেছে এক যুবক তার প্রেয়সীর খোঁজে..
জানি না তুমি লিখলে এমন বুক ভাঙা গান কিভাবে কেমন করে!
আমারও যে ঐ বৃষ্টি সিক্ত যুবকের মতো হয়ে যেতে ইচ্ছে করে
এ জীবনের সমস্ত শিকল ছিঁড়ে....।
আর তাই তোমরা বোঝো কি না বোঝো, প্রেম-বিরহ-দ্রোহের ঐশ্বর্যে
চির তারুণ্য অনুভবের নিশান আমার
সেটি উড়েই যাবে, গহীন জলের মতোন আমার অস্তিত্বের সকল নিমগ্ন তীরে।
(১৮.০২.২০২২)