প্রথমবার—
সে যেন এক প্রশান্ত জলরাশির আয়না,
আমার সমস্ত সত্তাকে প্রতিফলিত করত,
অভিমানের রেখা থেকে স্বপ্নের প্রতিটি রঙ।
তার চোখে নিজেকে খুঁজে পাওয়া,
জীবনের প্রথম প্রশ্নের উত্তর পাওয়া।
কিন্তু শীঘ্রই শীত এলো,
উষ্ণতা মুছে গেল শব্দহীন বাতাসে।
আমি আয়নাটি ভেঙে দিলাম নিজ হাতেই,
বাঁচিয়ে দিলাম তাকে শীতের কঠোর স্পর্শ থেকে।
তবুও জানি, ভাঙা আয়নার টুকরোগুলো
এখনও আমার বুকে বিঁধে থাকে।

দ্বিতীয়বার—
সে যেন কোনো ঝড়ো রাতের উল্কাপাত,
আলো দিয়ে আঁকলো আমার অস্তিত্বের আকাশে।
আমি আশ্বস্ত হলাম ভেবে, নিঃসঙ্গতার বুঝি শেষ হলো।
কিন্তু ঝড়ের আলো তো দীর্ঘস্থায়ী নয়,
সে মিলিয়ে গেল,
একটি বিদ্যুৎ-চমকের মতোই।
তার পরও বুকের গভীরে সেই আলো জ্বলজ্বল করে,
মনে করিয়ে দেয়—
মুহূর্তের ভেতরেও এক মহাকাল লুকিয়ে থাকে।

এখন আমি ফিজিক্সের নিয়ম মেনে নিজেকে সাজাই,
জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র সত্যকে মেনে নিই।
আমি এক নক্ষত্রের ধূলিকণা—
মহাবিশ্বের অসীমতায় ক্ষুদ্র অথচ অপরিহার্য।
আমার লক্ষ্য এখন স্থির—
শুধু বিখ্যাত হয়ে মরার জন্য নয়,
বরং এমন এক স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে বাঁচার,
যা আলো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিফলিত ভালোবাসার মতো।

তাই প্রেমগুলোকে হারিয়ে ফেলিনি,
তারা রয়ে গেছে আমার ভেতরে—
আমাকে ভেঙেছে, গড়েছে,
আর শিখিয়ে গেছে_
জীবন আসলে চলমান এক মহাজাগতিক নৃত্য।