মহাজ্ঞানের ভান্ডার জনকপুরে - সর্বদিকে খ্যাত
মিথিলার রাজা রাজর্ষি নামে-সুনামে সুপরিচিত।
দিন চলে যায় মাস চলে যায়- বছর কাটে খরায়,
ফসল ফলে না রাজ্য জুড়ে- ধুলোবালি উড়ে গড়ায়।
হাহাকার আর আর জল পিপাসা- সকল প্রজার ঘরে,
আজ জনক যেন দিশেহারা-রাজ্যে অন্ন সংস্থানের তরে।
উদ্ভিগ্ন আজ মনের কোণে- ঋষি মন বড় অস্থির,
রাণী সুনয়না দেয় আশার বানী- মন করতে সুস্থির।
রাজার মনে প্রজার আশা আশ্রিত- জানে জনক রাজা,
রাণী সুনয়না এসে কেঁদে বলে- তাঁর জন্য এই সাজা।
রাজ্য জুড়ে আকাল শুধু- সুনয়নার গর্ভের এই শূন্যতা,
মনের দুঃখে চোখ ভেসে যায়- রাজ্যের এই দৈন্যতা।
রাজ ঋষি আজ মৌন মুখে- রাণী সুনয়নার দিকে ফেরে
যখন শুনলেন সুনয়নার মুখে- দ্বিতীয় স্ত্রী আনতে ঘরে।
অবাক কন্ঠে বললেন তিনি- একি বললেন সুনয়না?
আপনিই প্রেম, আপনার প্রনয়- আমার জীবন মোহনা।
গৌরব মুখে বলেন তিনি- রাজ্যের প্রজারা মোর সন্তান,
তবুও গুরু অষ্টবক্রের কাছে যাবেন তিনি- যদি হয় অবসান।
মনে বিশ্বাস নিয়ে,ভক্তি নিয়ে- ছুটে গেলেন অষ্টবক্রের কাছে,
গুরু বললেন কর্ম করো ওহে রাজন- প্রকৃতির আশে পাশে।
শিব ভক্তি মনে প্রেম জাগায়- ওহে কর্ম করো সবায় নিজে,
গুরু অষ্টবক্রের এমন ধারণাতে - রাজঋষি পাইনি কিছু খুঁজে।
রাজ্যের হিতার্থে জনক রাজা- জান পরান প্রয়াসে মত্ত,
গুরু অষ্টবক্র তা মানতে পারলেন না- দিলেন কিছু তত্ব।
মিথিলায় আজ খরার রাজ্য- চতুর্দিকে শুধু ধূধূ মরুভূমি,
সেই ভূমিতে কর্ষণ করো ওহে জনক- সোনার হালে তুমি।
রাজ ঋষি অবাক কন্ঠে বললেন - ও হে কেমন পরীক্ষা গুরু
এতো বছর ধরে ভূমিতে বৃষ্টি হয়নি- অনউর্বর গাছ পালা তরু।
গুরু অষ্টবক্র হেসে বলেন - আস্তা এবং কর্ম করো ওহে রাজর্ষি,
বিশ্বাস আনো মনের মাঝে- আগুয়ান হও মিথিলারাজ তেজস্বী ।
রাজর্ষি জনক ছুটে গেলেন - আপন রাজ্যে নির্মাণে সোনার হাল,
রাজ প্রাসাদে যত অলংকার আছে- আজি পুড়িয়ে তাল সমতল।
নির্মিত হলো সোনার হাল- অতি মনোরম, শোভা চমৎকার,
পাথরসম শক্তভুমি - খন্ডনে যেন সোনার হালের অধিকার।
আজি জনক রাজা স্বয়ং নিজে- ধরলেন সোনার হালের খুঁটি,
মাঠের মধ্যে হাল লেগে গেলো- আটকে আছে সোনার বুটি।
অনেকক্ষণ মাটি খুঁড়লেন জনক রাজা- দেখে হতভম্ভ তাঁর মুখ,
মাটির কোলে শুয়ে আছে এক নবজাতক- মনে প্রসন্নতার সুখ।
কোলে তুলে নিলেন রাজর্ষি - মনে সমৃদ্ধ সুখের সরবরে,
মাতৃ হৃদয় যেন শান্ত হল রাণী সুনয়নার- জীবন পারাবারে।
মুহূর্তেই প্রকৃতির আজ নির্মমতা- আকাশ কাঁপিয়ে বড় ঝড়,
মিথিলার মাটি যেন পিপাসা মুক্ত- নদী-নালা ডোবা ঘর।
জনক পুরে আজ খুশির বন্যা- মন্দিরে মন্দিরে পাঠে গীতা,
রাজর্ষি আজ অতি প্রসন্ন- নামকরণ করলেন জনক নন্দিনী সীতা।
রচনাকাল
২৭।০৯ ।২০১৬
ইউ এ ই ।
বিঃদ্রঃ-প্রিয় কবিতাপ্রেমী আসরের কবিগণ, রামায়ণ হিন্দু ধর্মের একটি বড় গ্রন্থ।এটি রচনা করেছেন ঋষি বাল্মীকি মুনি। আমি চেষ্টা করবো পুরো রামায়নটাকে কবিতা আকারে আপনাদের সন্মুখে তুলে ধরার। এতে আমার ভুল ভ্রান্তি হলে মার্জনা করবেন এবং অনুগ্রহ করে আলোচনা করবেন। সবায়কে ধন্যবাদ।