তখন ছিলো সন্ধ্যাবেলা, চারদিকে আলো আঁধারের মন্থনের ক্ষণ
অফিস সেরে ,সারাদিনের ক্লান্ত শরীরের ক্লান্তি নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে।
কালরাতে বউয়ের সাথে হালকা- ঝগড়াঝাঁটি নিয়ে কিছুটা মলিনতা,
এটা নিতান্তই স্বাভাবিক, একসাথে চলতে গেলে শরীরে ধাক্কা খাওয়ার মত।
চমকপদ এই সংসারে প্রেমের আকর্ষণ ঝগড়াঝাঁটি থেকে বিকশিত হয়,
আর তা না হলে, প্রেমের সংজ্ঞা, কিংবা মহিমা খুঁজে নেওয়া কঠিন হতো।
শরীরের ঘামে ভেজা জামাটা খুলতে খুলতে অন্ধকার ঘরের আলো দিলাম,
টেবিলের উপরে একটা ভাঁজ করা কাগজের টুকরো দেখে চমকিত হলাম না।
আমি জানতাম, এমনি হবার কথা, মন বলে দিয়েছিলো, তাঁকে তো আমি চিনি,
সম্পর্কটা আমাদের গত ছয় বছরের বৈবাহিক, হলেও তার আগে প্রেমের চার,
আর এই দশ বছরের অভিজ্ঞতা, আমাকে তাঁকে অনেক ভাবে চিনিয়েছে।
মুঠোফোনটা তাঁর সুইচড অফ,খবর নিয়ে জেনেছি , পিত্রালয়ে যায়নি ,
বান্ধবীদের যাদের আমি চিনি, তাঁদের সাথে আলাপেও কোনো কর্মফল পাইনি,
তাহলে সে গেলো কোথায় ?
কেনোই বা এমন লুকোচুরি খেলা, এতে কি সমাধান মিলে? সমাধান তো আলোচনায়।
অভিমান ভালো, এতে প্রেমের সম্পর্কে গাঢ়ত্ব লাভ করে, তাই বলে এইভাবে?
যেই সূর্যে গ্রহণ লাগে, সেই সূর্য বোঝে গ্রহণের যন্ত্রণার কথা, কেটে গেলে মুক্তি।
আজ যে আমার মনের বন্দরে কষ্টের গ্রহণে লেগে ক্ষত-বিক্ষত , তার মুক্তি কবে?
উত্তরটা আমার কাছে অজনা, তবে বিশ্বাস সে ফিরে আসবে।
তারপর কেটে গেলো অনেকগুলো মাস, যদিও বছর পার হতে ক'দিন বাকি,
কেনো জানি না, নিজেকে আমি এখন অনেক বদলে ফেলেছি, ইচ্ছে করে করিনি,
মনে হচ্ছে যেন এমনিতে সব কিছুর রদবদল, প্রত্যহ রাত করে বাড়ি ফিরিনা,
আগের মত বন্ধুদের সাথে বাজে আড্ডা একদম কমে গেছে।
বেহিসাবী থেকে অনেকটা হিসাবী, যেটুকু ছিলো নিজেকে অজানা সেটা জেনে গেছি,
তাইতো নিজের প্রতি নিজের এমন পরিবর্তন ।
তবুও হাহাকার তো মনের মাঝে গেঁথেই আছে, আমার প্রিয়ার "চাঁদবদনের মেঘলা মায়া।"
ফিরে এসো, ফিরে এসো, ফিরে এসো..........
অতঃপর কোনো এক সন্ধ্যাবেলা, আকস্মত তাঁর উপস্থিতি,
পিছন থেকে আমার স্কন্দে আলতো করে ছুঁয়ে বললেন,
অ্যাঁই এম সরি। তোমাকে শুধুরাতে গিয়ে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেললাম, তাই না?
আমাকে ক্ষমা করো, আমার এতদিনের জমানো ব্যথিত হৃদয় যেন তাঁর
চাঁদবদনের মেঘলা মায়ায় আলোকিত করে দিলো.........।