পথের পাশে যে ফুল ফোটে,
গন্ধ ছড়ায় বৃথা,
নিত্য পথিক ঘ্রাণ নিয়ে যায়,
মনে রাখে কী তা?

যে জন করেন দেশের সেবা;
স্বার্থ ছাড়া ফেলে মাথার ঘাম,
এমন ঠ্যাকা কার পড়েছে
দেবে তাঁকে দাম!

মুক্তি-পাগল মজুর যুবা
যুদ্ধে করলো জয়,
মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট
তাঁদের জন্য নয়।

এ ভাতা পায়, ও ভাতা খায়,
লিস্টিটাতো বড়,
"দলের সাথে আছেন মশায়?
তা না হলে সরো।"

মুক্তিযোদ্ধা মইন চাচার বাড়ী গেলাম
সে বার বোশেখ মাসে,
হাঁড় গোনা যায় শরীরটাতে,
রক্ত কাশি কাশে।
আমায় জিগায়-"তুই কি বলতে পারিস
সনদ ক্যামনে পাই? অল্প কিছু ভাতা পেলে
ডাক্তার দেখাই!"

মইন চাচা যুদ্ধ করে
আনলো দেশের জয়,
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের কেউ কি জানে
কী খেয়ে সে রয়?

মুক্তিযোদ্ধা আবু তালেব, বেলাল উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী আর লাল মিয়ারা ভিক্ষা করে জীবন চালান,
তাঁদের রক্তে গড়া দেশে,
আবার কোন কোন মুক্তিযোদ্ধা রিক্সাচালান পত্রিকাতে আসে,
ভুয়া সনদধারীরা সব মর্যাদা পায় মন্ত্রীর আশেপাশে।
"যুদ্ধ না হয় না-ই করেছি, ইতিহাসতো জানি, এ যোগ্যতা কম কিসে, দাও সনদখানি!"

যুদ্ধ ছাড়াই কতজনের সনদ মিলে,
ফ্ল্যাট মিলে যায়, প্লট মিলে যায়;
লিস্টে উঠে নাম,
অনাহারে-অর্ধাহারে ধুকে ধুকে মরে মুক্তি
দূরের কোন গ্রাম।


লন্ডন
২৪ মার্চ ২০১৮