বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী হকিং জানিয়েছেন - আর বড়জোর এক্শ বছর থাকবে এই পৃথিবী। আগামী কালের মানুষদের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়ানক সব বিপদ।
কবিদের গালে হাত!
দার্শনিকের কপালে চিন্তার ভাজ।
কিন্তু, সত্যিই কি পৃথিবী ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে?
আপনারা কী বলেন?
এক্জন সমাজ বিজ্ঞানী বললেন - প্রবল জন বিস্ফোরণ আর পারিবারিক , সামাজিক জীবনে ও রাজ নৈতিক জীবনে নীতি হীনতা ,খাদ্য সমস্যা, সন্ত্রাসবাদের প্রাদুর্ভাব আর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে আমাদের পৃথিবীতে খুব গণ্ডগোল চলছে।এর থেকে সহজে মুক্তি নেই।
একজন ধার্মিক ব্যক্তি বললেন- অসত্য অন্যায় অধর্মের প্রতি মানুষের আস্থা, লোভের কিনারায় বার বার পা হড়কে পরা, ঈশ্বর বিশ্বাস না থাকা, জীবন সম্পর্কে সঠিক ধারণা তৈরি না হওয়া,রাজ শক্তির অসাধুতা, তস্কর ও দস্যুদের হাতে সমাজের রাশ চলে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলিই দূরন্ত গতিতে নানাভাবে আমাদের সমাজকে ও প্রকৃতি মাতাকে অবিরত দূষিত করে তুলছে।এ থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ আপাতত নেই।
আলোচনা চলতে লাগল- বাসে ট্রেনে ইসকুলে কলেজে-
এক্জন ছাত্র বললেন- আমরা ইন্টার নেটে, ফেসবুকে বিপ্লব তুলব। মানুষকে বোঝাবো।
এক্জন ছাত্রী বললেন- ইন্টার নেটে, ফেসবুকে বিপ্লব করে কিছু হবে না। যা ক্ষতি হবার তা হয়ে গেছে। মানুষের লোভ আর প্রবৃত্তিকে কী ভাবে কমানো যাবে কেউ জানেন কি?
এক্জন অধ্যাপক বললেন - এক্শ ব্ছর যাক আগে, তার পর ভাব্বো।
ব্যবসায়ী বললেন আগে আমি ব্যাঙ্ক ব্যালান্স টা বাড়িয়ে নিই তার পর ভাবা যাবে।
দেশের এক্জন মন্ত্রী বললেন - ও সব আজগুবি কথা, কান দেবেন না।
ভোগীরা বললেন আগে তো ভোগ করে নাও, তার পর দেখা যাবে।বোল্ডক্লাবে, নিষিদ্ধ পল্লীতে ,নাইটক্লাবে, পার্লারে ও সব কথা তুলতে নেই।
সেখানে শুধু মদ মাংস আর শরীরের উৎকট গন্ধ।
সবাই শুনছে... কেউ কেউ চোখা চোখা মন্তব্য করছে...
আর অন্য দিকে শিশুরা সব শুনছে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা।তাদের তো ভাল মন্দ বোধ গড়ে ওঠে নি - তারা শুধু মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে।
এদিকে সমাজ আগের মতই চলতে লাগলো।
দৈনিক পত্রিকা গুলিতে রোজই খবর বেরোতে লাগলো- -স্ত্রী খুন করছে স্বামীকে। সহায়তা করছে দুদিনের প্রেমিক। ছেলে খুন করছে বাবা মাকে। ব্যব্সায়ী তেলে বিষ মেশাচ্ছে......
সবজিতে মিশছে বিষ...মনে মিশছে বিষ...শিক্ষায় মিশছে বিষ...
অনেকে রাজনীতি ক'রে ব্যক্তি শ ত্রুতাকে পার্টিতে নিয়ে গিয়ে প্রতিবেশি নিকেশ করছে।
নেতারা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গুণ্ডাদের সাহায্য নিচ্ছে। বুদ্ধিজীবীরা গুণ্ডাতন্ত্রকেই গণতন্ত্র বলে ভুল করছে...পাড়ায় ...শহরে উপনিবেশকামী কোনো রাস্ট্রের সহযোগিতায় গড়ে উঠছে অস্ত্র কারখানা... ভ্দ্র বেশি ডাকাতেরা বন কেটে নিচ্ছে ...চোরা শিকারীরা বুনো পশু মেরে ফেলছে .........দেশের ও সমাজের সদর্থক নিয়ম ঐতিহ্য সংস্কৃতি বিকিয়ে দিচ্ছে উন্মাদ যুবক যুব্তীরা... আর সাতে পাঁচে অধার্মিক লোকেদের ছ্ল চাতুরির দ্বারা সত্যবাদী, দেশ প্রেমিক লোভ হীন মানুষকেই সাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে 'অমানুষ' রূপে ।
স্বামী স্ত্রীকে অবিশ্বাস করছে... প্রেমিক প্রেমিকাকে অবিশ্বাস করছে... নেতাকে অবিশ্বাস করছে সাধারণ মানুষ...বাতাসে তাপমাত্রা বাড়ছে...গর্ভস্থ সন্তানের হচ্ছে সুগার প্রেসার ইত্যাদি...
অনেক ছাত্র ছাত্রী কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক মত পড়াশুনা করছেন না। ওপেন চুম্বন করে তারা আবার সামাজিক প্রতিবাদ জানাচ্ছেন...কেউ কেউ যতটা পড়ছেন তার চেয়ে না পড়ছেন অনেক বেশি।তাদের ভাষাতেও দেখা যাচ্ছে মাস্তানি বুলি...কেউ কেউ দিশে হারা হয়ে পড়ছেন...অথচ এনারা দিশেহারা ভাব কাটানোর জন্য একবারও স্বামী বিবেকানন্দ পড়ছেন না। বেদ উপনিষদের স্মরণ নিচ্ছেন না...আর অনেক মাস্টার মশায়ও একবারের জন্য ভেবে দেখছেন না বেদ উপনিষদ হল মানুষের আত্মরক্ষার অস্ত্র । কেউ যদি এসব বলতে আসছেন তাকে বলা হচ্ছে - সেকেলে,সাম্প্রদায়িক...ইত্যাদি...
টিভি সিরিয়াল দেখতে দেখতে ছেলেমেয়েরা ঝগড়া করছে সিরিয়ালের ভাষায়...সিরিয়ালের দেখানো পথে তারা দিন যাপন করতে চাইছে...সময়ে অসময়ে তাদের নানা আবদারে বাবা মায়ের হচ্ছে নাভিশ্বাস...পাড়ায় গলিতে চলছে হিংসা উতসব...মানুষ খুন করে কেউ পুজো দিচ্ছে... নমাজ পড়ছে...অথচ ঈশ্বর বা আল্লাতো মানুষকে ভালোবাসার কথাই বলে গেছেন। কিন্তু অহঙ্কারী মানুষেরা ঈশ্বরের নামে নিজেরাই তৈরী করছে নানা লোকাচার, অনাচার,ব্যভিচার...উৎকট আচার...
একপ্রতি বেশি চাইছে অন্য প্রতিবেশিকে কিভাবে উৎখাত করে নিজে একা থাকবে...আর যারা সমাজকে সত্যিই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে সেই বড় বড় মানুষেরা সাক্ষাৎকারে শুধু মিথ্যা কথা বলছেন। নিজেরা যা নন তাই আপাতত ক্রিয়েট করার চেষ্টা করছেন।
ইন্টারনেট ,টিভি, মোবাইল ,ওয়াই ফাই সব চলছে।
তবু দুর্নীতি রোধ করা যাচ্ছেনা।
মিথ্যা রোধ করা যাচ্ছেনা ।
সব কিছু মিলে চারিদিকে শুধু গোলমাল...হই চই...
অশান্তি অশান্তি।
শান্তি কোথায়?
কবিতার ধ্বনি তবে কি ফিকে হয়ে আসে?
ছোট পাখিরা কেন হারিয়ে যাচ্ছে?
বুলবুলি কোকিলের আওয়াজের তুলনায় কেন বোমা গুলির আওয়াজ বেশি শোনা যাচ্ছে?
ভদ্র ও ভাল মানুষেরা কেন অসহায় হয়ে হা হুতাশ করছে ?
অভদ্র ও মন্দ মানুষেরা কেন মহা হুঙ্কারে দাপাদাপি করছে?
মানুষ মরছে... মানুষ বড় কান্দছে...
সত্যিই, পৃথিবী কি ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে?