শব্দ আসলেতো নাদ বা ধ্বনি। কিন্তু তার প্রকাশ দুভাবে হয়ে থাকে। যথা - সশব্দ প্রকাশ আর নিঃশব্দ প্রকাশ। শব্দের সশব্দ প্রকাশ বায়ুস্তরে কম্পাঙ্ক তৈরি করে। আর শব্দের নিঃশব্দ প্রকাশ বায়ুস্তরে কম্পাঙ্ক তৈরি করে না। কিন্তু শব্দের নিঃশব্দ প্রকাশ মানুষের মনে মনে, চিন্তায়-ভাবনায়, সম্পর্ক তৈরিতে, সম্পর্ক ভাঙতে, আবেগ নিঃসরণে, কল্পনার সৃজনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব তৈরি করে। একটি কবিতার শব্দরাশি কখনো নদী কখনো সমুদ্রের মতই শব্দময় হয়ে উঠতে পারে। নীরব পাঠেও সেই শব্দেরাই সহৃদয় মানুষের মনে যে কোনো ভাবের মানচিত্র নির্মাণ করতে পারে।ফলে শব্দই সাহিত্য রস তৈরি করতে পারে, শব্দই আনন্দ দিতে পারে। সুতরাং শব্দই হল আনন্দের উৎস। কবিরা শব্দে শব্দে মালা গাঁথেন । কবিরা শব্দে শব্দের বন্ধনে রচনা করেন অপূর্ব ভুবন। শব্দ মানুষকে সংস্কৃতিবান করে।
না না, শব্দ মানুষকে অসুস্থও করে । শব্দ মানুষকে মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দেয়। শব্দের তাণ্ডব মানুষের মনকে বিপথগামী করে, অহংকারী করে। সাম্প্রতিক ধর্মাচারে, পূজা-পার্বণে, সামাজিক অন্যান্য অনুষ্ঠানে কিছু মানুষের অজ্ঞানতার জন্য এক বিশেষ ধরনের ‘সাউণ্ড সিস্টেম’-এর ব্যবহার আপামর শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষের দিনযাপনকে করে তুলছে অসুস্থ ও কন্টকিত। হাজার হাজার ডেসিবল-এর চিৎকার হার্ট –এর রুগী, গর্ভবতী নারী, শিশুদের জীবনকে করে তুলছে আতঙ্কিত । এর বিরুদ্ধে সমাজ সচেতন মানুষ সকলে সরব হোন। শব্দদূষণ নয়, শব্দের অপব্যবহার নয়, শব্দের শালীন ব্যবহারেই গড়ে ওঠে সুস্থ সংস্কৃতি – এই সত্যটিই অবিবেচক মানুষকে বুঝতে হবে। সমাজকে ভালো রাখার জন্য এই বার্তাটির প্রচারে কবি- অকবি নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাই।