জন্মেছি গরিবের ঘরে, তাও আবার তোমরা যাকে বল নিচু- আভিজাত্যহীন, আমি তা-ই। নিচু হয়েই শুয়েছিলুম সীতাভ মাটিতে। রোদে পুড়ে জলে ভিজে শরীরের চামড়া হয়েছিল মিশকালো। ঘুমঘোরে একদিন কালো চামড়া কেটে নিলে। তাতে খসখসে ট্রাপিজিয়াম বানিয়ে দিলে বার্নিশের মতন রঙ। আটকালে বায়ু। তারপর দামি মিস্ত্রির হাতে মেশিনে সুতো সেলাই দিয়ে বানালে গোল আপেল। না, না- সূর্য । না- না, ওটা বলই ছিল।
গাড়ি চড়ে এলুম মাঠে। মাঠ ভর্তি লোকের সামনে একসময় কেউ আমাকে পায়ের আঘাতে উঁচু করে মারলে। দর্শকেরা হাঁ হয়ে গেল।একদিন আরেকজন জার্সিধারী দুরন্ত শর্ট নিয়ে আমাকে ছুঁড়লে জালে। বার বার ‘গোল’ ‘গোল’ চিৎকারে ভরে উঠল অঙ্গন –আকাশ- গুঞ্জন। একদিন আরো – আরো – । আরো একদিন আমাকে আঘাত করার জন্য কেউ পেল সোনার বুট, কেউ পেল ট্রফি, কেউ টাকা- সম্মান । আর আমার অমন অপমান হয়ে উঠল তোমাদের বিনোদন।
সুন্দরী আলোয় বিশ্ব আজও ঝলমল করে। সেন্ট মেখে সেনবাবুর জামা ভুরভুর।গাড়ি চড়ে যান নিত্য আমার মালিক বাবু।জালের আড়ালে কেউ শুধু টাকা গোনে। রঙ মাখে-মাখায়। একা শুয়ে আছি আমি- রংহীন-বীতক্রোধ বীতশোক আবার মাটিতে,বায়ুহীন বিবর্ণ ফুটবল।
।। ।। ।। ।। ।।