এই তো সেদিনও ব্যস্ত চৌরাস্তার সম্মুখে
এক পথ সভায় দীপ্ত কণ্ঠে শ্লোগান দিচ্ছিল ছেলেটা ;
চাকরি চাই চাকরি চাই , অন্নহীনের
মুখে অন্ন চাই , কৃষকের ন্যায্য মূল্য চাই !
এই তো সেদিন বিকালে ঐ ফাঁকা মাঠটিতে
আয়োজিত জনসভার মঞ্চ থেকে
ক্রুদ্ধ স্বরে শ্লোগান দিচ্ছিল ছেলেটা
শিল্প চাই , কর্ম চাই , যোগ্যের সম্মান চাই
বাঁচার মত বাঁচার অধিকার চাই !
এই তো সেদিন ঐ বাজারটিতে প্লাকার্ড হাতে
কয়েক জন যুবকের মাঝে তীব্র কণ্ঠে
শ্লোগান দিচ্ছিল ছেলেটা
মূল্যবৃদ্ধি চাই না , গরিবের বঞ্চনা চাই না
চাই সরকারি পয়সার পাই টু পাই হিসাব
চাই রক্ত চোষা দানব গুলোর বিচার
চাই খেটে খাওয়া মানুষগুলোর পাওনা গণ্ডা !
আজ সে আর নেই ;
ভোরবেলা খবর পেলাম
ওর খণ্ডবিখণ্ড নিথর দেহখানি
পড়ে আছে নির্জন রাস্তার ধারে !
অস্তগামী সূর্যের মত লাল শরীর বেয়ে
নীরবে ঝরে পড়ছে সমস্ত অধিকারের শ্লোগানগুলো ;
মিছিলে হাঁটা পায়ে জমে আছে চাপ চাপ রক্ত
কারা যেন পাঁজর ভেঙে বার করে নিয়েছে
ওর বিপ্লবী আত্মা , থামিয়ে দিয়েছে
ওর শিরা-উপশিরায় বয়ে চলা
বিদ্রোহী অনলে ফুটন্ত রক্ত স্রোত !
কে এই ছেলেটি ?
কেন দিল তার মূল্যবান জীবন বিসর্জন ?
ওর কি ছিল না আমার তোমার মত সংসার ?
ছিল ;
তবুও নিজ স্বার্থ ভুলে
সদ্য ইউনিভার্সিটি টপার ছেলেটি
স্বপ্ন দেখেছিল মানুষের মত মানুষ হওয়ার
স্বপ্ন দেখেছিল অবিচার , অত্যাচার ,
শোষণহীন এক সমাজ গড়ার ।
ওর দেখা স্বপ্নে কোনো খাদ ছিল না ;
তাই বেছে নিল সে এ কঠিন সত্যের পথ
মাথায় তুলে নিল কূলশিত সমাজের
অভিশাপ মুক্তির শপথ !
কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ;
চলে গেল অকালে তাজা একটি প্রাণ !
রেখে গেল প্রশ্ন চিহ্ন বিবেকি হৃদয়ের কাছে ;
সত্যিই কি বিপ্লবীদের মৃত্যু হয় ?
নাকি তাদের রক্তে জন্ম নেয় শত সহস্র বিপ্লবী ?
ভেবে দেখ বর্তমান এবং ভাবি প্রজন্ম ….।