গল্প শুনবে? তবে এসো।
তুমি আজ যেখানে দাঁড়িয়ে,
তা একদিন আমাদের ছিলনা।
আমাদের ছিলনা এই দিগন্ত জোড়া আকাশ,
ছিলনা রক্ত পলাশ, জবা, বেলিকা।
ছিলনা ঐ রক্তিম সূর্যটাও।
সাতচল্লিশ থেকে একাত্তর-
এক বিভৎস আঁধার গ্রাস করেছিল
স্নিগ্ধ, সবুজ এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল।
সত্যিই একদিন থমকে ছিল কালের নিরবধি;
সময় ছিল স্থবির, পৈশাচিক।
দুই যুগের প্রলম্বিত অমানিশায়
ওরা ভেবেছিল আর আসবেনা ভোর।
কিন্তু আমরা তখন শীতনিদ্রাচ্ছন্ন,
পুনর্জাগরণ হবে বলে,
অন্ধ হোমারের আরেকটি ইলিয়ড রচনা করব বলে,
দুই শতাব্দির শক্তি সঞ্চয় করছিলাম তখন
বুকের পাঁজরে।
তারপর, তারপর একদিন এল সেইদিন;
সময়ের গর্ভ থেকে উঠে এলেন এক কালজয়ী,
তর্জনী উঁচিয়ে, দৃপ্ত কণ্ঠে,
আকাশ কাঁপিয়ে পাঠ করলেন,
হাজার বছরের লালিত
তাঁর সেই অমরগাঁথা।
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।
অমনি মোহাচ্ছন্ন পতংগের মত দল বেঁধে
চলল সবাই আগুনের দিকে।
নিরস্ত্র হাত বদলে গেল
একেকটি গ্রেনেডের ট্রিগারে।
উল্কা হল চৌদ্দকোটি নির্ঘুম চোখ।
ত্রিশ লক্ষ প্রাণ প্রদীপের আলোয়
উদ্ভাসিত হল আরেকটি সূর্য।
যার আলোয় আজ তোমাদের
গল্প শোনাই-নতুন ভোরের।
রাত-১১টা
৪ মার্চ, ২০১৭, সিলেট।